Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 9:54 pm

স্ট্রোক আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালের যাওয়ার তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:  একসাথে আমরা স্ট্রোকের চেয়ে বড়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা বিশ্বের সাথে একসাথে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস’পালিত হয়েছে। 

আজ (২৯ অক্টোবর) সকাল ৮টায় নিউরোলজি বিভাগের উদ্যোগে চমেকের শহীদ শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে বৈজ্ঞানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা চমেক হাসপাতালের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

বৈজ্ঞানিক সভায় স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ক মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান। 

এসময় তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন, স্ট্রোকের কোনো চিকিৎসা নাই, এটি আসলে ভুল ধারণা। স্ট্রোকের চিকিৎসা যত আগে শুরু করা যায়, রোগীরা তত বেশি উপকৃত হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে অদূর ভবিষ্যতে স্ট্রোক রোগী কমবে না, বরং বাড়বে। তবে কেউ স্ট্রোক আক্রান্ত হলে দেরি না করে সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্ট্রোক সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে। কারণ স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ব্রেনের কোষ মারা যায়। এতে মস্তিস্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়। পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন রোগী মারা যায়। স্ট্রোক রোগীর পুনবার্সন প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। কারণ স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদী। তবে বর্তমানে আমাদের নিউরোলজি ওয়ার্ডে আধুনিক চিকিৎসা শুরু করেছি। স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ৩ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ওয়ার্ডে আসলে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। ইতোমধ্যে আমরা ৮ জন রোগীকে আইভি থ্রম্বোলাইসিস দিয়েছি। যা  শতভাগ সফল হয়েছে। রোগীরা সুস্থ জীবন যাপন করছেন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি ওয়ার্ডের চিকিৎসা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। এখানে আইভি  থ্রম্বোলাইসিস পদ্ধতির জন্য ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। গরীব রোগীদের পক্ষে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা খুব কঠিন। আমি এক্ষেত্রে রোগী কল্যাণ সমিতির কাছ থেকে গরীব  রোগীদের জন্য চিকিৎসা ব্যয়ভার বহনের  উদ্যোগ গ্রহণ করবো।

চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অংসুইপ্রু মারমা ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার।

অনুষ্ঠানে ‘আজকের  সচেতনতা, আগামী দিনের প্রতিরোধ’শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা.  রুশমিলা ফেরদৌস। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাশ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহিতুল ইসলাম, ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, ডা. মো. সালাউদ্দিন,  ডা. মসিহুজ্জামান আলফা, সহকারী অধ্যাপক ডা. জামান আহম্মদ,  ডা. আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. একরামুল আজম শাহেদ, নিউরোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার, রেজিস্ট্রার ডা. পীযুষ মজুমদার, আইএমও ডা. অমিত দে, ডা. হামিদ হাসান, ডা. মো. আবদুল্লাহ জোবায়ের, ডা. এসএম শওকত আলী, ডা. অদিতি দাশ, ডা. মো. আবদুল বাসেত হাসান ও ডা. কানিজ ফাতেমা রুদবা।