বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বে স্তন ক্যানসার একটি বড় সমস্যা। আমাদের দেশে নারীদের স্তন ক্যানসারের হার জরায়ু ক্যানসারের পর সর্বোচ্চ। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করতে পারলে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব।
কাদের ঝুঁঁকি বেশি: পঁয়ত্রিশের বেশি বয়সী নারী। অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক ব্যায়াম না করা। মদ্যপান করা। মেনোপজের পর হরমোন থেরাপি, রেডিয়েশন। অল্প বয়সে মাসিক শুরু ও দেরি করে অবসান। বেশি বয়সে সন্তান ধারণ বা সন্তানহীনতা। বংশগত কারণ (মা-খালাদের ইতিহাস)।
লক্ষণ: স্তনে ব্যথামুক্ত যেকোনো চাকা, স্তনের বোঁটার আকৃতিগত পরিবর্তন, যেমন ভেতরে ঢুকে যাওয়া, বোঁটা থেকে ক্ষরণ। স্তনের আকার ও আকৃতির পরিবর্তন। স্তনের চামড়া লাল হয়ে যাওয়া ও ছোট ছোট গর্ত হওয়া (কমলালেবুর পৃষ্ঠের মতো)। স্তনে ঘা। বগলে চাকা হওয়া।
প্রতিরোধ: প্রথম সন্তান ৩০ বছরের আগেই নেয়া ভালো। পরিমিত আহার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন ঠিক রাখুন। তামাক, গুল, মদ্যপান প্রভৃতি পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাদ্য ও ফাস্ট ফুড কম খেতে হবে। পর্যাপ্ত ফলমূল ও শাকসবজি খেতে হবে। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
চিকিৎসা: শল্য চিকিৎসা (সার্জারি), রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি ও টারগেটেড থেরাপি। কোন ধরনের চিকিৎসা কোন রোগীর জন্য প্রযোজ্য, সেটা নির্ভর করে রোগ কোন পর্যায়ে আছে এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা কেমন তার ওপর।
মনে রাখুন: ওপরে উল্লিখিত লক্ষণগুলোর একটি বা একাধিক দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। শুরুতে শনাক্ত করা খুব জরুরি। তাই সংকোচ ঝেড়ে ফেলতে হবে। তবে মনে রাখবেন, ম্যামোগ্রাফি বা স্তনের এক্স-রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘনঘন করা ঠিক নয়।
ডা. রওশন আরা
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক
রেডিয়েশন অনকোলজি
জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল