নিজস্ব প্রতিবেদক: স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে র্যালির ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢামেকের ডা. মিলন অডিটোরিয়ামে স্তন ক্যানসার সচেতনতার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষিত সন্তানও মায়েদের এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারছে না শুধু না জানার কারণে। এ ক্যানসারের কারণে চিকিৎসা নিতে গিয়ে একটা পরিবার নিঃস হয়ে যাচ্ছে। ৫০ শতাংশ ক্যানসারে মারা যাচ্ছে। যারা মারা গেছেন তারাও পরিবারকে নিঃস করে মারা গেছেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেনÑস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, লাইন ডিরেক্টর (এনডিসি) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার, ডা. শাহরিয়ার নবী শাকিল ডিন ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আলীয়া শাহনাজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, মা-বোনরা নিজের অজান্তে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। কেন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন, এসবের গবেষণা দরকার। একটা শিক্ষিত সন্তানও মায়েদের এসব বিষয়ে সাহায্য করতে পারছে না শুধু না জানার কারণে। এ ক্যানসারের কারণে চিকিৎসা নিতে গিয়ে একটা পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। ৫০ শতাংশ ক্যানসারে মারা যাচ্ছে। যারা মারা গেছেন তারাও পরিবারকে নিঃস্ব করে মারা গেছেন।
সচিব বলেন, পরিবারকে কীভাবে সচেতন করতে হবে, এ বিষয়ে আমাদের জানতে হবে। সহজ সাবলীল ভাষায় লিফলেট বানাতে হবে। স্কুল, কলেজে এ লিফলেট বিতরণ করতে হবে; যাতে পরিবারকে বুঝাতে পারে। এভাবে আমরা অবশ্যই ক্যানসার শনাক্ত ও মৃত্যুর হার কমাতে পারব। বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে ক্যানসার হাসপাতাল ও এর যন্ত্রপাতি বাড়াতে হবে।
চিকিৎসকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের শরীরের প্রতি যতœ নেবেন। আপনারা অসুস্থ হলে জাতিও অসুস্থ হয়ে পড়বে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্তন ক্যানসারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ইব্রাহীম খলিল। তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে প্রথমবার আমেরিকায় পালিত হয় এ দিবস। পরে বিভিন্ন দেশে পালিত হতে থাকে। বাংলাদেশেও প্রতি বছর পালিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে অনেকে বুঝতে পারে না। বুঝতে বুঝতে অনেক সময় দেরি করে ফেলি। গ্রামাঞ্চলে সমস্যাটা বেশি হয়। কবিরাজি, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে সময় নষ্ট করে।
ডা. ইব্রাহীম বলেন, স্তন ক্যানসার শনাক্তের একমাত্র পদ্ধতি স্ক্রিনিং করা। এ স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে প্রথম স্টেজে ধরা পড়ে। ৪০০’র বেশি সবাইকে এই পরীক্ষা করানো উচিত।
স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলো হচ্ছে, নিপল ভেতরে ঢুকে যাওয়া, চামড়া কমলালেবুর খোসার মতো হয়ে যাওয়া। স্তনে অনেক সময় চাকার মতো হয়। অনেক সময় ব্যথা অনুভব হয় না। তখনই বুঝতে হবে আপনার স্তনে খারাপ কিছু হতে পারে। আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এর আগে স্তন ক্যানসার সচেতনতা মাস উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ও রেডিওথেরাপি বিভাগ।