Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:16 am

‘স্থানীয়রা আমাকে পাঠকবন্ধু রাকিব হিসেবে চেনেন’

লক্ষীপুর সদর উপজেলার বাঞ্ছানগর গ্রামের মরহুম মনোয়ার রহমান খোকনের ছেলে রাকিব হোসেন একজন সফল উদ্যোক্তা। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। দাদা মরহুম গোলাম রহমান জাতীয় পত্রিকার এজেন্সির পাশাপাশি জেলার পাঠকদের কাছে সংবাদ পরিবেশনের জন্য পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। স্বাবলম্বী হওয়ার প্রবল আগ্রহ ও দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে রহমানিয়া প্রেসের হাল ধরেন রাকিব। সম্প্রতি এক আলাপচারিতায় তার পথচলা, ব্যবসা ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জেনেছেন শেয়ার বিজের লক্ষীপুর প্রতিনিধি জুনায়েদ আহম্মেদ

শেয়ার বিজ: আপনার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী…

রাকিব হোসেন: দাদার হাত ধরে প্রেসে আসতাম। পরে পত্রিকা ব্যবসা রপ্ত করি। জেলার পাঁচটি উপজেলায় সাত থেকে আটটি এজেন্সি থাকলেও দাদার রেখে যাওয়া পত্রিকা ব্যবসা প্রসারিত করে আমি গড়ে তুলেছি ব্যতিক্রমধর্মী পত্রিকা এজেন্সি ‘রহমানিয়া প্রেস’। স্থানীয়রা সবাই আমাকে পাঠকবন্ধু রাকিব হিসেবে চেনেন।

শেয়ার বিজ: আপনার উদ্যোগ সম্পর্কে বলুন…

রাকিব হোসেন: আল-আমিন প্রেসের মালিক মরহুম মাওলানা এছাক উদ্দিন জামানত সমস্যার কারণে ব্যবসা ছেড়ে দেন। পরবর্তী সময়ে এজেন্সি সংকটের কারণে আমার দাদা মরহুম গোলাম রহমান এজেন্সি গড়ার উদ্যোগ নেন। ওই সময় ঢাকা থেকে মীর হোসেন মোল্লা পত্রিকা পাঠাতেন। সাপ্তাহিক বিনোদন পূবালী, বাংলার বাণী, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, দৈনিক দেশ, জনপদসহ সাত-আটটি পত্রিকা আসতো। এক আনা, দুই আনা, চার আনা ও পঞ্চাশ পয়সা দিয়ে পত্রিকা বিক্রি করা হতো। পত্রিকার প্রাণ হচ্ছে সংবাদ। জেলাভিত্তিক সংবাদগুলো পরিবেশন করা হলে সে পত্রিকার চাহিদা বেড়ে যায়। আমার এখানে বর্তমানে ১০ হকার নিয়মিত পত্রিকা বিক্রির সঙ্গে জড়িত আছেন। এর মধ্যে সৈয়দ আহম্মেদ ভূঁইয়া (১১৩) পত্রিকা এজেন্সির জন্ম লগ্ন ৪০-৪২ বছর ধরে হকারি করছেন। ঢাকা থেকে বর্তমানে নোমান ও মোর্শেদ পত্রিকা পাঠান। বর্তমানে জাতীয় ও আঞ্চলিক মিলিয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ রকমের পত্রিকা আমার এজেন্সিতে আসে।

শেয়ার বিজ: চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার কারণ…

রাকিব হোসেন: চাকরিতে স্বাধীনতা নেই। তছাড়া ই-মিডিয়ার চেয়ে আজও সংবাদপত্রের ওপর মানুষের ঝোঁক বেশি। তাই পাঠকের হাতে দৈনন্দিন পত্রিকা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

শেয়ার বিজ: কোনো সমস্যায় পড়েছেন?

রাকিব হোসেন: অনেক পত্রিকা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জামানত ফেরত পাইনি। ফলে ব্যবসায়িক বিড়ম্বনায় পড়েছি অনেকবার।

শেয়ার বিজ: আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশেষত্ব কী?

রাকিব হোসেন: আমার প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন পাঠকদের পড়ার সুবিধার্থে সৌজন্য কপি রাখা হয়। ফলে তারা পড়তে পারেন, চাহিদামতো পত্রিকা সংগ্রহ করতে পারেন। এখানে পাঠকদের পাশাপাশি পত্রিকা বিক্রিতে হকারদেরও গুরুত্ব দেওয়া হয়। হকার বাঁচলে মালিক বাঁচবে, মালিক বাঁচলে এজেন্সি বাঁচবে বলে আমি মনে করি। তাই কমিশন ছাড়াও তাদের নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।

শেয়ার বিজ: বর্তমানে প্রতিবন্ধকতা…

রাকিব হোসেন: বর্তমানে সড়কপথে নানা সমস্যার কারণে পাঠকের কাছে পত্রিকা পৌঁছাতে দেরি হয়। সম্ভাবনাময় এ জেলার কৃষি, উন্নয়ন ও তথ্যভিত্তিক সংবাদের জন্য পাঠকদের কাছে দৈনিক শেয়ার বিজ পত্রিকারও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু পাঠকের চাহিদামতো অনেক সময় এজেন্সিগুলোয় পত্রিকা পাওয়া যায় না।

শেয়ার বিজ: সমস্যা সমাধানে কী করা যেতে পারে?

রাকিব হোসেন: অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পত্রিকাবাহী যানবাহন গন্তব্যস্থলে নিরাপদে পৌঁছানোর বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। পত্রিকার প্রসারের জন্য তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে পাঠক, এজেন্সি ও হকারদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

শেয়ার বিজ: পাঁচ বছর পর কোন অবস্থানে যেতে চান?

রাকিব হোসেন: পত্রিকা যেন দ্রুত পাঠকের কাছে দেওয়া যায়, সেজন্য হোম সার্ভিস পদ্ধতি আরও গতিশীল করার ইচ্ছা আছে।

শেয়ার বিজ: নতুন উদ্যোক্তা সম্পর্কে বলুন…

রাকিব হোসেন: নতুন উদ্যোক্তাদের বলতে চাই, ব্যবসার মূল শর্ত সততা। হার মানলে চলবে না। অবশ্যই পাঠকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।