শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে অনেক বিদেশি কোম্পানি ইরান ছাড়তে বাধ্য হবে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব এড়াতে স্থানীয় বিনিয়োগকারীর প্রতি নজর দিচ্ছে দেশটি। এজন্য মূল্য ও কর প্রণোদনাসসহ বিভিন্ন সুযোগের প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইরান সরকার। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা গত শনিবার এমন তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানিকে নিয়ে গঠিত ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের দীর্ঘদিন ধরে কঠিন আলোচনার পর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষর করে দুই পক্ষ। পরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সমঝোতাটি অনুমোদনের মাধ্যমে এটি আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ মে সেই আইন লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই সমঝোতা থেকে বের করে নেন।
ইরানের সঙ্গে সব বাণিজ্য-সম্পর্ক বন্ধ করতে সব দেশের প্রতি চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ৪ নভেম্বরের মধ্যে ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি ইরানের বন্দরগুলোতেও পণ্য পরিবহন করা যাবে না। সম্প্রতি ইরান থেকে তেল আমদানি কমাতে বা বন্ধ করতে ভারতের তেলমন্ত্রী দেশটির পরিশোধনকারীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্র বলছে, ইরান থেকে তেল আমদানি করলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন হুশিয়ারির পরই ভারত বিকল্প ভাবছে।
এমন পরিস্থিতিতে যাতে অর্থনীতি ভেঙে না পড়ে, সেই লক্ষ্যে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি আকৃষ্ট করতে চাইছে সরকার। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসহাক জাহাঙ্গীর বলেন, অভ্যন্তরীণ ৭৬ হাজার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন অথবা অসম্পূর্ণ রয়েছে। এসব প্রকল্পে বিনিয়োগে স্থানীয়দের কর হ্রাস ও মূল্য নির্ধারণে ছাড় দেওয়া হবে বলে মনে করছেন তিনি।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও ইরানের তেল উত্তোলন ও রফতানিতে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি বলে জানিয়েছেন দেশটির তেলমন্ত্রী বিজান জাঙ্গানে। তিনি বলেন, মার্কিন হুমকি মোকাবিলার জন্য ইরান এরই মধ্যে একটি পরিকল্পনা নিয়েছে এবং সে পরিকল্পনা সফলতার সঙ্গে কাজও করছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইরানকে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল বিক্রি করতে দেওয়া হবে না এবং দেশটির তেলের উত্তোলন শূন্যের কোঠায় আনা হবে। এর জবাবে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ইরান তেল বিক্রি করতে না পারলে হরমুজ প্রণালী দিয়ে কাউকে তেল বিক্রি করতে
দেওয়া হবে না।
মার্কিন অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য নিষেধাজ্ঞা আবার চাপিয়ে দেওয়ার কঠোর নিন্দাও করেছে অনেক দেশ। পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার বিষয়ে ইউরোপ আগের চেয়ে বেশি আন্তরিক। ইউরোপের ছোট ও মাঝারি পর্যায়ের অন্তত ১০০ কোম্পানি ইরানে কাজ করছে। ইরানের সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখার সঠিক উপায় বের করার চেষ্টা করছে ইইউ।