স্থূলতা বা ওবেসিটি একটি রোগ। এটি শরীরের এমন একটি অবস্থা, যেখানে শরীরে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়। সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর এর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। এমনকি আয়ু কমে যেতে পারে।
সারা পৃথিবীতে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ স্থূলতায় ভুগছেন। স্থূলতাজনিত সমস্যার কারণে বছরে তাদের সম্মিলিত ব্যয়ের পরিমাণ এক লাখ ডলারের বেশি। মোটা মানুষদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি কমপক্ষে দ্বিগুণ। আর ২০৩০ সাল নাগাদ শিশু-কিশোরদের মধ্যে স্থূলতার হার ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে স্থূলকায় লোকের সংখ্যা বেশি না হলেও অতিরিক্ত ওজনের লোক একেবারে কম নয়।
দৈহিক স্থূলতার কারণগুলো
এক. পরিমাণে বেশি বা বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ। দুই. শ্রমবিমুখ বা কম পরিশ্রম। তিন. জিনগত ত্রুটি
অতিরিক্ত ওজন কমাবেন কীভাবে
ক. ওজন কমাতে গিয়ে কখনোই খুব বেশ তাড়াহুড়া করা উচিত হবে না। তাড়াহুড়া করে ওজন কমানোর কিছুদিন পর আবার বৃদ্ধি পেলে তা আগের তুলনায় বেশি ক্ষতির কারণ হবে। এ ছাড়া অতি দ্রুত ওজন কমালে শরীরে বিপাকীয় অসামঞ্জস্য দেখা দেবে; খ. প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে একটি পরিবর্তন অভ্যাস করুন। যেমন হয়তো ফল খাবার অভ্যাস নেই, প্রতিদিন এক টুকরা ফল খেতে শুরু করুন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে মোটামুটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করুন; গ. নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ তালিকায় কম ক্যালরির খাদ্য বেশি রাখুন। এ রকম খাদ্যগুলো হলো শাকসবজি, কাঁচা টক ফল ইত্যাদি। যারা ইতোমধ্যে স্থূলকায় হয়ে গেছেন, তাদের বেলায় ভাত, রুটি, মাছ, মাংস প্রভৃতি শাকসবজি দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে; ঘ. মিষ্টি, ডেজার্ট, ক্রিমযুক্ত খাদ্য যতটা সম্ভব কম খান। চা পান করলে এক চামচের বেশি চিনি নয়। পোলাও, বিরিয়ানি, মোগলাই, কাবাবজাতীয় খাবার পরিহার করুন; ঙ. প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে জোরে হাঁটার অভ্যাস করুন। এর বাইরে যখন সম্ভব তখনই একটু কায়িক শ্রম করে নেবেন। দিন শেষে ১০ হাজার পদক্ষেপ হাঁটা হলে ভালো।
ডা. শাহজাদা সেলিম
সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়