স্বপ্নের ফাইনালে মুখোমুখি ফ্রান্স ক্রোয়েশিয়া শিরোপা কার?

ক্রীড়া ডেস্ক: একদিকে আঁতোয়ান গ্রিজম্যান, কিলিয়ান এমবাপে, অলিভিয়ে জিরুদ, অন্যদিকে ইভান রাকিটিচ, লুকা মদ্রিচ ও মারিও মানজুকিচ। যে দু’দলে এমনসব তারকার সমাবেশ, তারা তো স্বপ্ন দেখতেই পারেন বিশ্বকাপের। কিন্তু আজ তো এ ট্রফি উঠবে যে কোনো একটি দলের হাতে। সে দলটি কোনটি? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজ মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্স ও বেলজিয়াম। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। তার আগে দু’দলই চূড়ান্ত প্রস্তুতি শেষ করেছে।
এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। ১৯৯৮ সালে ঘরের মাঠে নিজেদের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০০৬ সালে জার্মানি বিশ্বকাপে ইতালির কাছে ফাইনালে হারে ফরাসিরা। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো বড় কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে এবার পা রেখেছে ক্রোয়েশিয়া। ২০ বছর আগে এ ফ্রান্সের কাছে সেমিফাইনালে হেরে বিশ্বকাপের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ক্রোয়েটদের। দলটির সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তৃতীয় হয়ে। তবে সেসব এখন অতীত। তাই সেদিকে মোটেও নজর দিচ্ছেন না রাকিটিচ। তার চিন্তায় শুধুই আজকের ম্যাচ। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেই ম্যাচটা পেছনে ফেলে রাখতে হবে। ইতিহাস ইতিহাসই এবং অতীত অতীতই। কিন্তু আমাদের সেই অতীতকে পেছনে রাখতে হবে। তারা সেবার শিরোপা জিতেছিল। রোববার আমরা
জিততে চাই।’
এবার যে করেই হোক, বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁতে চায় ক্রোয়েশিয়া। এজন্য এখন পর্যন্ত জেতা সব শিরোপা বিনিময় করতে রাজি রাকিটিচ। ক্রোয়েটদের তারকা এ মিডফিল্ডার এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমি বিশ্বকাপের জন্য সব শিরোপা বিনিময় করব। যদি বিশ্বকাপ জয়ের মূল্য হিসেবে আমার বুটজোড়া তুলে রাখতে হয়, তাহলে আমি অবশ্যই তা করব। আমার দেশের সাফল্যের জন্য যে কোনো মূল্য দিতে রাজি। ব্যক্তিগত প্রাপ্তি কোনো বিষয় নয়, এটা আমাদের সবার ব্যাপার।’
দেশের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণে নিজেদের রক্ষণভাগকে চাবিকাঠি হিসেবে দেখছেন ফ্রান্সের আঁতোয়ান গ্রিজম্যান। সে সঙ্গে তারকা ফরোয়ার্ডের প্রত্যাশা, আক্রমণভাগে তার দুই সতীর্থ অলিভিয়ে জিরুদ ও কিলিয়ান এমবাপে ভালো করবেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলে রক্ষণভাগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; কারণ আমরা জানি আক্রমণভাগে আমরা যে কোনো সময় গোল করতে পারি।’
এখন পর্যন্ত ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু একবারও ফরাসিদের হারাতে পারেনি ক্রোয়েটরা। তাইতো আজ মস্কোতে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিতে চায় জøাতকো দালিচের দল। একই সঙ্গে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদও পেতে চায় ক্রোয়েটরা। তবে চাইলেই কি সেটা হতে দেবে ফ্রান্স? উত্তরটা স্বাভাবিকভাবেই আসবে না। কেননা, এরই মধ্যে ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ীরা জানিয়েছে, জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলতে চায় তারা।
চলতি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই অপরাজিত ক্রোয়েশিয়া। যার শুরুটা দলটি করেছিল গ্রুপপর্ব থেকেই। কোনো ম্যাচ জিততে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু নক আউটে এসে সেটা ছিনিয়ে নিতে টানা তিন ম্যাচ অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে। শেষ ষোলোয় ডেনমার্ক ও কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে জয় আসে পেনাল্টি শুট আউটে। আর সেমিফাইনালে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে মারিও মানজুকিচের অতিরিক্ত সময়ের গোলে ইংলিশদের পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চের ফাইনালে জায়গা করে নেয় জøাতকো দালিচের দল। এদিক দিয়ে ক্রোয়েটদের চেয়ে আজ কিছুটা পেছনে থাকবে ফ্রান্স। কেননা, দুই জয় ও এক ড্রয়ে ‘সি’ গ্রুপের সেরা হয়ে নকআউট পর্বে পা রাখে ফ্রান্স। শেষ ষোলোয় লাতিন পরাশক্তি আর্জেন্টিনাকে হারানোর পর কোয়ার্টার ও সেমিফাইনালে পেরোয় উরুগুয়ে ও বেলজিয়াম বাধা। প্রতিটি ম্যাচই শেষ হয়েছে ৯০ মিনিটে।
লুকা মদ্রিচ, মারিও মানজুকিচ ও ইভান পেরিসিচ চলতি বিশ্বকাপে রয়েছে দুর্দান্ত ফর্মে। দুটি করে গোল করেছেন তারা। যে কারণে তাদের ঘিরেই আজ ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপের স্বপ্ন বুনছে ক্রোয়েশিয়া। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের হয়ে সবচেয়ে বেশি তিনটি করে গোল করেছেন ফরোয়ার্ড আঁতোয়ান গ্রিজম্যান ও কিলিয়ান এমবাপে। ছয় ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ১০ গোল দেওয়ার পাশাপাশি ফ্রান্স হজম করেছে ৪ গোল। সব মিলিয়ে জমজমাট একটি ফাইনাল ম্যাচের অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০