Print Date & Time : 26 June 2025 Thursday 2:39 am

স্বর্ণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: নিজ দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের মাধ্যমে মিয়ানমার বাংলাদেশের সীমান্তে যে সংকট তৈরি করেছে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ‘রুলিং’ প্রত্যাশা করেছে বলে জানিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রোম সংবিধি গ্রহণের বিশতম বার্ষিকী উপলক্ষে নেদারল্যান্ডসের হেগে গত সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আয়োজিত একটি সিম্পোজিয়ামে অংশ নিয়ে স্পিকার এ কথা বলেন।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুতদের শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত কার্যকর ভূমিকা চেয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। সিম্পোজিয়ামে তিনি বলেন, সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আইসিসির কাছে রোহিঙ্গাদের বলপূর্বক অনুপ্রবেশ করানোর বিষয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রুলিং প্রত্যাশা করে।
রোহিঙ্গা বিতাড়নের অভিযোগে মিয়ামমারের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা প্রশ্নে বাংলাদেশের মতামত জানতে চেয়ে গত মে মাসে চিঠি দিয়েছিলেন হেগের আন্তর্জাতিক আদালত। জুনের শুরুতে বাংলাদেশ সরকার ওই চিঠির জবাব দিয়েছে বলে সে সময় জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। কিন্তু সেখানে মিয়ানমারের বিচারের পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি তখন। তবে এখন হেগের আদালতে অনুষ্ঠিত সিম্পোজিয়ামে বাংলাদেশের স্পিকারের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তা অনেকটা স্পষ্ট হলো।
স্পিকার বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববাসী মিয়ানমার কর্তৃক একটি সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার মতো হƒদয়বিদারক ঘটনা প্রত্যক্ষ করল। জাতিসংঘ ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাটিকে জাতিগত নিধন ও গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এখন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত ও কার্যকর ভূমিকা।
মিয়ানমার লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করে যেভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে, তার বিচার করার এখতিয়ার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আছে কি না, তা জানতে রুল চেয়ে হেগের ওই আদালতের কৌঁসুলি ফাতোও বেনসুদা গত এপ্রিলে একটি আবেদন করেন। রোহিঙ্গাদের এভাবে বিতাড়নের বিষয়টি যেহেতু আন্তঃসীমান্ত অপরাধের পর্যায়ে পড়ে এবং বাংলাদেশ যেহেতু আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য, সেহেতু আইসিসি বিষয়টি বিচারের এখতিয়ার রাখে বলে রুল পাওয়া গেলে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার পথ তৈরি হবে বলে আশা করছেন ফাতোও বেনসুদার। এ বিষয়ে বাংলাদেশের মতামত পাওয়ার পর মিয়ানমারের বক্তব্য জানতে চেয়ে সময় বেঁধে দিয়েছেন হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আগামী ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে মিয়ানমারকে এর জবাব দিতে হবে।
হেগের সিম্পোজিয়ামে স্পিকার বলেন, মিয়ানমার আইসিসির সদস্য না হলেও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য আইসিসির ‘প্রি-ট্রায়াল চেম্বার-১’-এ উপস্থাপন করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সর্বজনীন রোম সংবিধির গুরুত্বকে স্বীকার করে এবং আদালতের সব লক্ষ্য অর্জনে অব্যাহতভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে। অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়তে বাংলাদেশ দৃঢ় প্রত্যয়ী। অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসীর সঙ্গে বাংলাদেশ সহযাত্রী হবে।