Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 2:49 pm

স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা বন্দরবাজার

 

প্রতিনিধি, সিলেট: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আজির উদ্দিন। সিলেটের রায়নগর এলাকা থেকে সপ্তাহে দু-তিন দিন রাত ৯টার দিকে হেঁটে হেঁটে চলে আসেন বন্দরবাজারে। কাছাকাছি অনেক বাজার থাকলেও তিন-চার কিলোমিটার পথ দূরে আসার উদ্দেশ্য সড়কের পাশের কাঁচাবাজার থেকে কিছুটা কম দামে সবজি কেনা যায়। রাত ১০টার পর বাজার করে নিয়ে যান তিনি।

আজির উদ্দিনের মতো সুযোগ পেলেই নগরীর বাগবাড়ী থেকে বন্দরবাজারে সবজি কিনতে আসেন ৫০ বছর বয়সী আব্দুল হাছিব। তিনিও রাত ১০টায় আসেন এ বাজারে। একইভাবে কিছুটা কম দামে সবজি কিনতে প্রতিদিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার পর ওই কাঁচাবাজারে আসেন নগরীর করিমউল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী সাজ্জাদুল করিম।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস হয়ে ওঠা স্বল্প আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা এ কাঁচাবাজার। সড়ক দখল করে বসা এ বাজারের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও একশ্রেণির মানুষের কাছে এটি কিছুটা স্বস্তির জায়গা। কারণ যেখানে মাত্র ১০০ গজ ভেতরে ব্রহ্মময়ী বাজারে যে সবজির দাম ৫০ টাকা, সেখানে সড়কে বসা বাজারে ওই সবজি মিলে ৪০-৪৫ টাকায়, যে কারণে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কের পাশে বসা কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় জমে।

এবার ভরা মৌসুমেও সবজির বাজারে স্বস্তি মেলেনি। ২০২৩ সালে বছরজুড়েই লাগামহীন ছিল বাজার। নতুন বছরে এসেও কোনো পরিবর্তন নেই। বাজারে মাছ, মাংস, সবজি কোনোটাতেই স্বস্তি মেলেনি। সরকার বারবার নিয়ন্ত্রণের কথা শোনালেও বাস্তব চিত্র উল্টো।

পাশের সবজির বাজারে দেখা যায়, টমেটো প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিকেজি ২৫-৩০ টাকা, ফুলকপি ৩০-৩৫ টাকা, শিম ৪০-৫৫ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, আলু ৫০ টাকা ও লাউ প্রতিটি ৭০-৮০ টাকা। এছাড়া শালগম প্রতিকেজি ৩৫-৪০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা ও শসা ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বন্দরবাজারে সবজি কিনতে আসা সাইদুর রহমান বলেন, এ বছর আলুর দাম আর কমবে না। ভরা মৌসুমেও আলুর কেজি ৫০-৬০ টাকা। সামনে রোজার মাস। প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে যাবে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও বাজারে তার চিত্র ঠিক উল্টো।

সিলেটের কালিঘাট এলাকার পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমীন ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মাসুদ আহমদ বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় পাইকারি বাজারে দাম খুব বাড়েনি। অনেকটা স্থিতিশীল ছিল। তবে ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। খুচরা ব্যবসায়ী খুব বেশি পণ্য কিনছেন না।