Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 7:44 pm

স্বল্প মূলধনি কোম্পানি নিয়ে কারসাজি নতুন নয়

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের এর নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

পুঁজিবাজারের টার্নওভার বাড়াতে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টার্নওভার যখন এক হাজার কোটি টাকার ওপরে থাকে তখন সাধারণত স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়ে না। এমনকি ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে থাকলেও অনেক সময় স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর ধীরগতিতে থাকে। কিন্তু বাজারের টার্নওভার ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে থাকলেই স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধি বেশি হয়। কারণ বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ পুঁজি দরকার তা জোগান দেওয়ার মতো লোক সে মুহূর্তে বাজারে থাকে না। তাছাড়া স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলো নিয়ে বাজারে যে কারসাজি হয় তা নতুন কিছু নয়। কারণ আপনি যেখানে জানেন যে, কারা কী করছে আর সেখানে যদি সঠিকভাবে চিহ্নিত না করতে পারা যায় তাহলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের গ্রন্থনা, সঞ্চালনা ও সম্পাদনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. ফোরকান উদ্দিন, এফসিএ এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু সাঈদ চৌধুরী, এফসিএ।
মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, বাজারের টার্নওভার নিয়ন্ত্রণে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, টার্নওভার যখন এক হাজার কোটি টাকার ওপরে থাকে তখন সাধারণত স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়ে না। এমনকি ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে থাকলেও অনেক সময় স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর ধীরগতিতে থাকে। কিন্তু বাজারের টার্নওভার ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে থাকলেই স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধি বেশি হয়। কারণ বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ পুঁজি দরকার তা জোগান দেওয়ার মতো লোক বাজারে সে মুহূর্তে থাকে না। তাছাড়া স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলো নিয়ে বাজারে যে কারসাজি হয় তা নতুন কিছু নয়। যে কারণে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর জন্য আলাদা বোর্ডও হচ্ছে। আর এ বোর্ড না হওয়া পর্যন্ত আমার মনে হয় না এর কোনো প্রতিকার হবে। এখানে কিন্তু নীতিনির্ধারকরা ব্যর্থ। কারণ আপনি যেখানে জানেন যে, কারা কী করছে আর সেখানে যদি সঠিকভাবে চিহ্নিত না করতে পারা যায় তাহলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অন্যদিকে কথা হচ্ছে, নীতিনির্ধারকরা কেন এটি দেখবে? তাদের তো এটি দেখার কথা নয়। কারণ টাকা আমার, শেয়ার কিনব আমি নিজেই, আপনি বলার কে, ব্যাপারটা এমন। তারপরও রেগুলেশন বলে একটি কথা থাকে। বাজারে যদি অন্যায্য কিছু হয় তাহলে সেখানে নীতিনির্ধারকদের হস্তক্ষেপ করার যথেষ্ট কারণ থাকে। এখানে কতটুক হস্তক্ষেপ হয় বা যদি প্রকৃতপক্ষেই হস্তক্ষেপ হতো তাহলে বাজারে অন্যায্য কিছু হবে কেন? তাছাড়া সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও কিছু দোষ আছে বলে মনে করি। তা না হলে বিডি অটোকারের শেয়ার গত এক মাসে ১২০ থেকে ৪০০ টাকায় যায় কিভাবে? তিনি বলেন, বাজারে পণ্যের অভাব রয়েছে আমরা শুধু ইকুইটি নিয়ে চলি। তাই বাজারে কিছু অন্যায্য কাজ থাকবেই। বাজারে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা থাকত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য যদি থাকতো তাহলে বর্তমানের তুলনায় অনেক কম সমস্যার সম্মুখীন হতো।
আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারে বেশকিছু শেয়ার আছে যা ২০১০ সালের বাজার ধসের সময়ও মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি। ২০১৬-১৭ সালে এসে ওই শেয়ারগুলো থেকে মানুষ দুই থেকে তিন গুণ প্রফিট নিয়েও বের হতে পেরেছে। আর ওই শেয়ারগুলোতে মূলত স্বল্প সময়ে প্রফিট করা যায় না। দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে হয়। বিনিয়োগের দুই থেকে তিন বছর পর ওই শেয়ারগুলো থেকে ভালো প্রফিট পাওয়া যায়। কিন্তু দেশের অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বল্প সময়ে অধিক লাভের প্রবণতা কাজ করে। আর এ প্রবণতায় ছুটতে গিয়েই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাজেই এ মানসিকতা থেকে অবশ্যই আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে।

শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম