প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:
আমাদের পুঁজিবাজার অমিত সম্ভাবনাময়। বর্তমানে বাজার অনেক স্বচ্ছÑতা বিনিয়োগকারীরাও বুঝতে পারছেন। তাই তারা ভালো কোম্পানির সঙ্গে থাকতে চান। কিন্তু শুধু যে ব্যাংক খাতেই ভালো কোম্পানি আছে না নয়। তাই বর্তমানে অনেকে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে অন্যান্য খাতের ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছেন। বহুজাতিক অনেক কোম্পানি আছে, যারা প্রতিবছর ভালো লভ্যাংশ দেয়। এমনকি ২০১০ সালের ধসের সময়ও তারা ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর প্রবণতাই হচ্ছে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা করা। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে এ বিষয়গুলো আলোচিত হয়। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন আইনজীবী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব এবং অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।
হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, নির্বাচনের আগে সারা পৃথিবীতেই কম-বেশি বিদেশি ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে জড়িত হয়। বড় শিল্পপতিরা বাজারে যুক্ত হন। এতে করে বড় ফান্ড যখন বাজারে আসে, তখন ভালো শেয়ারগুলোর দাম বাড়ে। শুধু ব্যাংক ছাড়াও অন্যান্য খাতে ভালো শেয়ার আছে। আমাদের স্থানীয় কিছু ম্যানুফ্যাকচারিং ও মাল্টিন্যাশনাল ভালো কোম্পানি আছে বাজারে। শুধু একটি খাত দিয়ে তো আর বাজার চলে না। ব্যাংক খাত থেকে লাভ করে এখন বেশ কিছু বিনিয়োগকারী অন্য খাতে ছড়িয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে বাজার অনেক স্বচ্ছÑতা বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারছেন। ব্যাংক খাতের ভালো শেয়ারে মানুষ সব সময় থাকবে; কিন্তু সবগুলো ব্যাংক তো আর ভালো না। ফলে দুর্বল কোম্পানি থেকে বিনিয়োগকারীরা এখন সরে আসছেন। তাছাড়া মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো অনেক ভালো ডিভিডেন্ড দেয়। লক্ষ করলে দেখবেন, ১৫ বছরে স্কয়ার, রেনাটা, অলিম্পিক বিনিয়োগকারীদের অনেক ভালো মুনাফা দিয়েছে। এমনকি ২০১০ সালে বাজারধসের সময়ও যাদের কাছে এ তিনটি কোম্পানির শেয়ার ছিল, তাদের ৩০০ থেকে ৭০০ শতাংশ পর্যন্ত লাভ হয়েছে। ৯ হাজার সূচকে কিনে বর্তমানেও একই পরিমাণ লাভ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, সামনে আমাদের পুঁজিবাজারের অমিত সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আশপাশের অন্যান্য দেশের বাজার মূলধনের তুলনায় আমরা এখনও শিশু। আমাদের বাজার তিন পা এগোয় তো দুই পা পেছায়। এর কারণ হিসেবে আমি সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বাজারে লেনদেন বাড়ে; আবার কমে যায়। এখনও বিনিয়োগকারীদের সংশয় রয়ে গেছে। আমাদের বাজারে যারা বিনিয়োগকারী, তারা মূলত প্রকৃত বিনিয়োগকারী নন। তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করেন না। তারা দৈনিক অথবা সাপ্তাহিক বিনিয়োগ করেন। ফলে পুঁজিবাজারে যদি সিংহভাগ মানুষ স্বল্প সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে চায়, তাহলে তাদেরও তা করার সুযোগ দেওয়া এবং বাজার যে দ্রুত ওঠানামা করে তা বন্ধ করার কোনো একটি পদ্ধতি বিএসইসির খুঁজে বের করতে হবে। যেহেতু বিনিয়োগকারীদের বৈশিষ্ট্য এটি, কাজেই এসব বিষয় মাথায় রেখেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম