রসে টইটম্বুর গাইবান্ধার রসমঞ্জরি। স্বাদেও অনন্য। সুস্বাদু এ মিষ্টান্নের পরিচিতি আছে দেশজুড়ে। একবার কেউ খেলে কিছুতেই ভুলতে পারবে না এর নাম। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশেও, যদিও তা বাণিজ্যিকভাবে নয়। অনেকে বিদেশ-বিভুঁইয়ে থাকা প্রিয়জনদের কাছে পাঠান এ মিষ্টান্ন। তাই তো রসমঞ্জরি জেলা নামেও পরিচিতি রয়েছে গাইবান্ধার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ-টু-আই প্রজেক্টের মাধ্যমে রসমঞ্জরিকে জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য করার সুপারিশ করা হয়েছে।
দেখতে ঠিক যেন মারবেলের মতো গোলাকার এই রসমঞ্জরি। তৈরিতে প্রয়োজন হয় গরুর খাঁটি দুধ, ছানা, চিনি ও ছোট এলাচ। চুলায় অনবরত জ্বাল দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় দুধকে ঘন ও সুস্বাদু করে তোলা হয়। এরপর ঘন দুধে ছেড়ে দেওয়া হয় ছানার তৈরি রসগোল্লার চেয়ে ছোট মারবেলের মতো গুটিগুলো। চুলো থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করার পর বিক্রি করা হয়।
দেশের বিখ্যাত সব খাবারের মধ্যে রয়েছে গাইবান্ধার রসমঞ্জরি। শুধু গাইবান্ধায় নয়, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় রসমঞ্জরি পাঠানো হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন স্বাদে অতুলনীয় এ রসমঞ্জরি কিনে থাকেন।
১৯৪০ সালে শহরের সার্কুলার রোডের রমেশ চন্দ্র ঘোষ প্রথম ব্যবসায়িকভাবে রসমঞ্জরি তৈরি শুরু করেন। স্বাদে অনন্য হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে জেলার গণ্ডি পেরিয়ে সারা দেশে এর সুনাম ও পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে জেলার কয়েকটি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে রসমঞ্জরি পাওয়া যায়। প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা।
গাইবান্ধার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান রমেশ সুইটসের স্বত্বাধিকারী বাদল ঘোষ জানান, আগের মতো ভালো মানের দুধ পাওয়া যায় না। নেই সেই মানের কারিগরও। পুরোনো কারিগরের অনেকে বেঁচে নেই। যারা আছেন তারাও বয়সের ভারে ন্যুব্জ। তার পরও তিনি মান ধরে রেখে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন রসমঞ্জরি।
আমিনুল ইসলাম সোহেল