নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ‘স্বাধীনতাবিরোধী সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে’ মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘অপসাংবাদিকতা’র প্রমাণ পেলে ছেড়ে দেবেন না। সাংবাদিকতার সঙ্গে ‘নৈতিকতা’ রক্ষার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন মহিলা লীগ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
মহিলা লীগের অভিযোগ, আলোচিত সেই ঘটনাটি ‘প্রথম আলোর নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও কল্পকাহিনি’।
নানক বলেন, ‘আমাদের মহান স্বাধীনতার ৫২ বছর দেশবাসী যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করছিল। তখন দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের (প্রথম আলো) একটি বিশেষ সংবাদ দেশবাসীর দৃষ্টিগোচর হয়। এই ষড়যন্ত্রমূলক ও কল্পকাহিনির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে মহিলা আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসেও রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে, হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে। এই পবিত্র মাহে রমজানেও প্রতিবাদ করতে হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতার সঙ্গে নৈতিকতাও রক্ষা করতে হবে। সাংবাদিকতার সঙ্গে অপসংবাদিকতা প্রমাণিত হলে আমরাও ছেড়ে দেব না। আমরা প্রতিবাদে নেমেছি, প্রতিবাদ করতেই থাকব এবং ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত আমরা ভেঙে দেব।’
স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর বিতর্ক তোলা সেই প্রতিবেদনটিকে ১৯৭৪ সালে ইত্তেফাকে প্রকাশিত কুড়িগ্রামের চিলমারির বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বাসন্তীর ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেন এ আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা চুয়াত্তর সালে দেশের পরিস্থিতি বোঝাতে জাল গায়ে দিয়ে বাসন্তীর ছবি ছাপিয়েছে। সারাবিশ্বকে একটি বার্তা দিয়েছিল এবং আমার স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল। সেই ষড়যন্ত্র এখনও চলমান। গত ২৬ মার্চ কী কারণে সবুজকে জাকিরের নাম দিয়ে সংবাদ ছাপা হলো? সেই সংবাদ তারা কেন এবং কী উদ্দেশে ছাপাল? এই পত্রিকাটি (প্রথম আলো) সব সময় আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন-অগ্রগতি ও শান্তির ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে, তখন ষড়যন্ত্র করে আর কোনো লাভ হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতির এই ধারাকে কোনোভাবেই ব্যাহত করা যাবে না।’
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, “মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর একজন ক্যামেরাম্যান কোমলমতি শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে ‘আমাগো মাছ, মাংস আর চাউলের স্বাধীনতা লাগব’ বলে যে মন্তব্য করিয়েছেন, তা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থি এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলাসহ সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখার নেতারা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।