শেয়ার বিজ ডেস্ক: স্বাধীনতার সুফল যেন দেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছায় সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ওই অনুষ্ঠানে এবার ১৩ ব্যক্তি এবং এক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। খবর: বাসস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা দেশের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের খুঁজে বের করে পুরস্কৃত করা প্রয়োজন। আমি এটুকু আহ্বান করব আজকের বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, এক্ষেত্রে যাদের অবদান রয়েছে তারা গ্রাম-বাংলায় ছড়িয়ে আছে। আপনারা দেখবেন অনেকে তাদের অল্প একটু সম্পদ নিয়েও হাজারো মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাদের সহযোগিতা করে। তারা যে মানব কল্যাণে অবদান রেখেছেন সে জন্য তারা পুরস্কারপ্রাপ্তির যোগ্য। আমি নিজেকে ধন্য মনে করি যে, গুণীজনদের আমরা সম্মান দিতে পেরেছি। তারপরও আমরা জানি, অনেকজন রয়ে গেছেন তাদের আমরা দিতে পারছি না।’
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য এবার শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এটিএম জাফর আলম (মরণোত্তর), মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক (মরণোত্তর), অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ (মরণোত্তর), সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ব্যারিস্টার শওকত আলী খান (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং ডা. কাজী মিসবাহুন নাহার স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন।
একইভাবে চিকিৎসায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজসেবা বা জনসেবায় অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক হাসিনা খানকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শ্রেণিতে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, স্বাধীনতার সুফল যেন বাংলার মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারি এবং আর্থসামাজিকভাবে যেন আমরা উন্নত হতে পারি, উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে যেন আমরা একটা মর্যাদা ফিরে পেতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশবাসী তার সুফল পাচ্ছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের বিনির্মাণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করার পাশাপাশি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ গঠনে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এক সময় বাংলাদেশের কথা শুনলেই বিশ্ববাসী বলত দুর্ভিক্ষের দেশ, ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। একটা অবহেলার চোখে দেখত। সত্যি কথা বলতে কি, আমাদের খুব কষ্ট লাগত শুনতে।
এ স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘদিনের সংগ্রাম জাতির পিতা করেছেন বা আমরাও ওই সময়ে ভুক্তভোগী। চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন গেছে। আমরাও চলার পথে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। যারা মুক্তিযুদ্ধের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করে দেশকে স্বাধীন করেছেন, জীবন অকাতরে বিলিয়েছেন, খুব স্বাভাবিকভাবেই সে দেশটাকে যদি কেউ সম্মানের সঙ্গে না দেখে, সেটা আমাদের কষ্টের কারণ বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের এক দশকের চেষ্টায় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। মাথাপিছু আয় এ অর্থবছরে বেড়ে ১৯০৯ ডলার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশটাকে মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় নিয়ে আসতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছাতে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
