Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 8:58 pm

স্বাধীনতা পদক বিতরণেও ‘আত্মীয়করণ’: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতা পদক বিতরণেও সরকার ‘আত্মীয়করণ’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে দলের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ তো ব্যর্থ, এ তো অযোগ্য তারা (সরকার) যে স্বাধীনতার পদক যেটা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চালু করেছিলেন, সেই স্বাধীনতার পদক নিয়ে তারা দুর্নীতি করেছে। যেখানে আমির হামজা নামে একজনকে তারা পদক দিয়েছে, যার সম্পর্কে পরে বাতিল করে দিয়ে আবার নতুন করে তারা তদন্ত করছে। শুধু তারই কেন? আরও যাদের দিয়েছেন তাদেরটা তদন্ত করুন, তারা কারা? এদের বেশিরভাগই হয় এই মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজন অথবা প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন তাদেরকেই এই পদক দেয়া হয়েছে।’

বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে চিকিৎসা ও সেবা কমিটির উদ্যোগে ‘স্বনির্ভর দেশ গঠনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আপসহীন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার অবদান’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় সাতজন প্রখ্যাত চিকিৎসক মুক্তিযোদ্ধাকে তাদের অবদানের জন্য ক্রেস্ট দেয়া হয়।

তারা হলেনÑঅধ্যাপক ফরিদুল হুদা, অধ্যাপক মোবিন খান, অধ্যাপক শামসুল ইসলাম, ডা. সাহাদাত হোসেন, অধ্যাপক মোমিনুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক আবদুল হক। এছাড়া বিএনপির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আবদুস সালামকেও সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়।

প্রয়াত ডা. মো. ফরিদুল হুদার পক্ষে তার ছেলে নাজমুল হুদা বিপ্লব ও অধ্যাপক মোবিন খানের পক্ষে ডা. সাইফুল ইসলাম লেলিন ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, চতুর্দিকে তারা (সরকার) লুটপাট, দুর্নীতি এমন একটা জায়গায় নিয়ে চলে গেছেÑএখন দেশ রক্ষা করতে হলে একমাত্র তাদের সরানো ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। তারা গণতন্ত্রের সর্বনাশ করেছে। লাখ লাখ মানুষকে ঘরছাড়া করেছে। আমাদের ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করেছে, ৬০০ অধিক মানুষকে তারা গুম করে দিয়েছে, সহস্র মানুষকে তারা হত্যা করেছেÑএই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।

তিনি আরও বলেন, ‘সব পেশাজীবীর কাছে আমরা আহ্বান জানাব, আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে, সব রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিবাদী ভয়াবহ সরকারকে সরিয়ে আমরা সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’

দেশের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অর্থনীতিবিদরা বলছেনÑদেশে দারিদ্র্যের হার দুই পারসেন্ট বেড়ে গেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা একদম কমে গেছে। এটা বাস্তবতা। দ্রব্যমূল্য এমনভাবে বেড়েছে, ইনফ্লুয়েশন এমনভাবে বেড়েছে, মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ ২৪ ঘণ্টা আমাদের ওবায়দুল কাদের সাহেব বিএনপির দুঃস্বপ্ন দেখেন এবং সমানে কথা বলতে থাকেন। এখানেই বুঝা যায়, বিএনপি শুধু আছে না, বিএনপি প্রবলভাবে আছে যে, তাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।’

চিকিৎসা ও সেবা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ও সদস্য ডা. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. আব্দুস সেলিম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন ডাবলু, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. শহীদুল আলম প্রমুখ চিকিৎসক বক্তব্য দেন।