মানব দেহের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রক্ত। এ উপাদান ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। রক্ত বা ব্লাডের গ্রুপকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। একটা
ABO system (অ, ই, অই ও ঙ); অপরটি জয (A, B, AB I O); AciwU Rh factor {Rh positive(+ve) I Rh negative (-ve)}|
আরএইচ ফ্যাক্টর ঠিক করবে ব্লাড গ্রুপ পজিটিভ, নাকি নেগেটিভ। ব্লাড গ্রুপগুলো হচ্ছে A+ve, A-ve, B+ve, B-ve, AB+ve, AB-ve O+ve, O-ve| জয নেগেটিভ গ্রুপের ব্যক্তিকে জয পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দেওয়া হলে প্রথমবার সাধারণত কিছু হবে না। কিন্তু এর বিরুদ্ধে রোগীর শরীরে এন্টিবডি তৈরি হবে। যদি রোগী আবার পজিটিভ গ্রুপের রক্ত নেয়, তাহলে তার ব্লাডসেলগুলো ভেঙে যাবে। এতে নানারকম সমস্যা হবে। যেমন জ্বর, কিডনি ফেইলিউর, আকস্মিক মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়এবিও ইনকমপ্যাটিবিলিটি।
স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একই হলে অনেকের ধারণা, স্বামী ও স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে সমস্যা হয়। কিন্তু বাস্তবে তা ঠিক নয়। বরং একই রকম হওয়া জরুরি। অর্থাৎ স্বামীর ব্লাডগ্রুপ যদি পজিটিভ হয়, সেক্ষেত্রে স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপও পজিটিভ হতে হবে
স্বামীর ব্লাডগ্রুপ যদি নেগেটিভ হয়, তাহলে স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ পজিটিভ বা নেগেটিভ হলেই হবে
স্বামীর ব্লাডগ্রুপ যদি পজিটিভ হয়, তাহলে স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হলে স্বামীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হতে হবে।
স্বামীর ব্লাডগ্রুপ পজিটিভ আর স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হলে কী সমস্যা হবে
রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কোনো সমস্যা হয় না। স্ত্রীর নেগেটিভ হলে এবং স্বামীর পজিটিভ হলে ‘লিথাল জিন’ বা ‘মারন জিন’ নামে একটি জিন তৈরি হয়, যা পরবর্তী সময়ে জাইগোট তৈরিতে বাধা দেয় বা জাইগোট মেরে ফেলে। ফলে মৃত বাচ্চার জন্ম হয়। যদি স্বামীর ব্লাডগ্রুপ পজিটিভ হয়, সেক্ষেত্রে বাচ্চার ব্লাডগ্রুপও পজিটিভ হবে। নেগেটিভ ব্লাডগ্রুপের মা পজিটিভ ভ্রুণ ধারণ করলে তখন প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু ডেলিভারির সময় পজিটিভ ভ্রুণের ব্লাড placental barrier ভেদ করে এবং
placental displacement-এর সময় মায়ের দেহে প্রবেশ করবে, যা কয়েক মাসের মধ্যেই মায়ের শরীরে আরএইচ অ্যান্টিবডি তৈরি করবে।
মা যখন দ্বিতীয় সন্তান নেবেন, তার ভ্রুণের ব্লাডগ্রুপ যদি পুনরায় পজিটিভ হয়, তাহলে মায়ের শরীরে আগে তৈরি হওয়া আরএইচ এন্টিবডি placental barrier ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। ফলে ভ্রুণের শরীরে আরএইচ এন্টিবড়ি ঢোকার কারণে fetal-এর আরবিসির সঙ্গে agglutination হবে। এতে ভ্রুণের আরবিসি ভেঙে যাবে। ফলে বাচ্চা নষ্ট বা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান খান
সাহাবুদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল
ঢাকা