নিজস্ব প্রতিবেদক: যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং মেট্রোরেলের চলমান উন্নয়ন কাজের জন্য চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করে আনন্দময় পরিবেশে ক্যাম্পাসে নববর্ষ উদযাপনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। গতকাল বাংলা নববর্ষ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য এই আহ্বান জানান।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, প্রক্টর, অফিস প্রধান এবং বিভিন্ন সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে টিএসসি থেকে: নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কারণে চলাচলের পথ সরু থাকায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা টিএসসির সড়কদ্বীপ থেকে বের করা হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রা স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হবে। কভিড-১৯ বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় জনসমাগম সীমিত রাখতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মুখোশ পরিধান করা যাবে না: পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ক্যাম্পাসে নববর্ষের দিন সব ধরনের অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে অপরাহ্ন ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে।
এদিকে নববর্ষের আগের দিন ১৩ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধু নীলক্ষেত মোড়সংলগ্ন গেট ও পলাশী মোড়সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন। সর্বসাধারণের চলাচলে এই সাময়িক অসুবিধার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছে।
নববর্ষের দিন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনের রাজু ভাস্কর্যের পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগত ব্যক্তিবর্গ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদের সামনে ছবির হাটের গেট, বাংলা একাডেমির সামনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট-সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে প্রস্থানের পথ হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট, রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠসংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রসংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশপাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।
এছাড়া, সভায় নববর্ষের দিন নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করে তা মনিটরিং করার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে সভায় প্রো-ডাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে ২৭ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এই কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সভায় কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে ২টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এগুলো হচ্ছে শৃঙ্খলা উপ-কমিটি ও মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটি।
১২ সদস্যবিশিষ্ট শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং সদস্য সচিব সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম। ৩৮ সদস্যবিশিষ্ট মঙ্গল শোভাযাত্রা উপ-কমিটির আহ্বায়ক চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং সদস্য-সচিব সহকারী প্রক্টর মো. নাজির হোসেন খান।