বাংলাদেশের কিশোরী মেয়েদের অপুষ্টির পেছনে রয়েছে মূলত দুটি কারণ পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়া ও অল্প বয়সে গর্ভধারণ। বয়ঃসন্ধিকালের তিন মেয়ের মধ্যে একজনই রুগ্ণ। আর মেয়েদের ১১ শতাংশই অনেক বেশি রোগা-পাতলা। তাদের অধিকাংশেরই জিংক, আয়োডিন ও আয়রনের মতো পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে।
বৈশ্বিকভাবে দেখা গেছে, পরিণত বয়সের মায়ের গর্ভে সন্তানের মৃত্যুর ঘটনার দ্বিগুণ ঘটে ২০ বছরের কম বয়সিদের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে ২০ বছরের কম বয়সি মায়েদের প্রতি এক হাজার জীবিত জন্মদানের ক্ষেত্রে ৩১ জনের মৃত্যু হয়।
২০ বছরের বেশি বয়সি নারীদের গর্ভধারণ বা সন্তান প্রসবের সময় মৃত্যুর ঘটনার দ্বিগুণ ঘটে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে, এই হার পাঁচ গুণ হয় ১৫ বছরের কম বয়সি মেয়েদের ক্ষেত্রে।
বয়ঃসন্ধিকালীন ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্যসেবার অধিকার নিশ্চিত করতে প্রচারণা, সরকারি নীতিতে এ বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা, উন্নততর সেবা প্রদানের ব্যবস্থা এবং কমিউনিটির ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের জন্য কাজ করছে ইউনিসেফ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কৈশোরকালীন স্বাস্থ্যনীতিতে তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি, তাদের প্রতি সহিংসতা রোধ এবং কিশোরী মায়েদের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা-সংক্রান্ত সার্বিক কার্যক্রমের একটি অংশে পুষ্টি, এইচআইভি, পয়োনিষ্কাশন, ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা, জীবন দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে শিক্ষা এবং গণমাধ্যমে অংশগ্রহণের মতো বিষয়ও রয়েছে। প্রতিবন্ধী কিশোর-কিশোরীরাও যাতে এসব সেবা পায়, সে বিষয়টিও এখানে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
দুই পর্যায়ে সহায়তার ওপর গুরুত্ব দেয় ইউনিসেফ। প্রথমত, সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সরকারকে সহায়তা করা হয়। যেমন নীতি সংশোধন, কৌশল ও পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং কর্মসূচি তৈরি। দ্বিতীয়ত, যেসব জেলায় বাল্যবিয়ের হার অনেক বেশি, সেসব জেলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেশের মধ্যে কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ।
স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে ইউনিসেফ। কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য, উন্নয়ন, সুরক্ষা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার আছেন তাদের দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য ইউনিসেফ সেবাদাতা ও সামনের কাতারের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো কেনা, বিতরণ ও তা তদারক করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে কাজ করা হয়।
ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে