উনিশ শতকের বিখ্যাত ফরাসি কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক গি দ্য মপাসাঁ’র আজ ১২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। মপাসাঁ প্রধানত ছোটগল্পের জনক হিসেবে বেশি পরিচিত হন। বিপ্লবী পূর্ণেন্দু দস্তিদার তার ফরাসি ‘লা গাইলাইস’-এর অন্তর্ভুক্ত ‘নেকলেস’ গল্পটি অনুবাদ করেন। দ্য মপাসাঁ ১৮৫০ সালের ৫ আগস্ট ফ্রান্সের নরম্যান্ডিতে জন্মগ্রহণ করেন। প্যারিসে আইন বিষয়ে শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় তিনি ফরাসি-প্রুশীয় যুদ্ধের কারণে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৮৭২ থেকে ১৮৮০ সাল পর্যন্ত তিনি সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে ফ্রান্সের নৌ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। ১৮৬৭ সালে জুনিয়র স্কুলে পড়াশোনা করার সময় মায়ের উৎসাহে পারিবারিক বন্ধু ফ্লবেয়ারের সঙ্গে পরিচিত হন মপাসাঁ। ফ্লবেয়ার তাকে নিজের শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন এবং সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে দিকনির্দেশনা দেন। ১৮৭৫ সালে ফ্লবেয়ারের নির্দেশনায় নাটক লেখেন এবং অভিনয়েও অংশ নেন তিনি। ১৮৭৮ সালে মপাসাঁ ‘লা ফিগারো’, ‘গিল ব্লাস’, ‘ইকো দে প্যারিস’-এর মতো বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৮৮০ সালে ‘বুলে দে সুইফ’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের মধ্য দিয়ে সাহিত্য জগতে মপাসাঁর আত্মপ্রকাশ। একই সময় প্যারিসের তারুণ সাহিত্যিক দলের একটি সাহিত্য সংকলনে তার প্রথম গল্প ‘ব্যুল ডি সুইফ’ স্থান লাভ করে। এরপর ‘দিউক্স আমিস’, ‘মাদার স্যাভেজ’, ‘মাদেমোইসেল ফিফি’ প্রকাশ হয়। ১৮৮৩ সালে ‘মাদমোয়াজেল ফিফি’ নামে আরেকটি গল্প প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি সরকারি রোষানলের শিকার হলো। এরপর প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘আন-রি’। ১৮৮৫ সালে তিনি রচনা করেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘বেল আমি’ (ইবষ-অসর)। ১৮৮০ থেকে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত বছরে কমপক্ষে দুটি, কখনও কখনও চারটি করে গল্প সংকলন প্রকাশ করেন। মাত্র এক দশক সাহিত্যচর্চার জীবনে তিনি রচনা করেন ৩০০ ছোটগল্প, ছয়টি উপন্যাস, বেশ কিছু কবিতা ও তিনটি ভ্রমণকাহিনি। গল্পের পটভূমি হিসেবে ব্যবহার করেন ফরাসি-প্রুসীয় যুদ্ধ। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নেকলেস গল্পটিও তার লেখা। ১৮৯৩ সালের ৬ জুলাই মাত্র ৪৩ বছর বয়সে এই প্রতিভাবান সাহিত্যিক মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা