স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ও উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা জ্যোতি বসুর আজ ১০৭তম জন্মবার্ষিকী। ভারতের প্রখ্যাত বাম রাজনীতিক ও পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ১৯১৪ সালের ৮ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশবের অনেকটা সময় কেটেছে বাংলাদেশে তার পৈতৃক ভিটা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার বারদী চৌধুরীপাড়া গ্রামে। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৩৫ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর লন্ডনের মিডল টেম্পল থেকে ব্যরিস্টারি পাস করে ১৯৪০ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন এবং ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৪৬ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে অবিভক্ত বাংলার শেষ প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন জ্যোতি বসু।  ১৯৪৬ সালে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ সালে জ্যোতি বসু ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের জনগণের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন জ্যোতি বসু। তিনি সরাসরি ভারত সরকারকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি ও তার দল বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। তিনি গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকেও সুপারিশ করেন। জ্যোতি বসু কমিউনিস্ট দলের সদস্য হিসেবে ১৯৭৭ সালের ২১ জুন থেকে ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ বছর সাফল্যের সঙ্গে একটানা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করেন। তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯৬৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে তাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়; কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্বের পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। ২০০০ সালে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে দলের অন্যতম সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। বাঙালির অকৃত্রিম বন্ধু এই মহান রাজনীতিবিদ ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ জানায়।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১