Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 1:56 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমানের ৯২তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলীতে জম্নগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলী গ্রামে। ১৯৫৭ সালে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। তিনি মর্নিং নিউজ, রেডিও পাকিস্তান, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রায় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি হওয়ার পর তার সাংবাদিক জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৪৩ সালে তার প্রথম কবিতা ‘উনিশ শ’ ঊনপঞ্চাশ’ প্রকাশিত হয়। তিনি ৬৬টি কাব্যগ্রন্থ, কবিতা, চারটি উপন্যাস, দুটি প্রবন্ধগ্রন্থ, শিশুকিশোর সাহিত্য, আত্মস্মৃতি, পাঁচটি অনুবাদ, আটটি ছড়ার বই, বেশ কিছু গান ও নাটকসহ সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন। তার রচিত বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা, আসাদের শার্ট, বিধ্বস্ত নীলিমা, ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯, পুলিশ রিপোর্ট, হরতাল, এ লাশ আমরা রাখব কোথায়, ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা অমর কাব্যগ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনি অত্যন্ত মর্মাহত হন এবং রচনা করেন কবিতা ‘বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে’ ও ‘ধন্য সেই পুরুষ’। ১৯৬৭ সালে রেডিও পাকিস্তানে রবীন্দ্রসংগীত সম্প্রচার নিষিদ্ধ করলে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান পাকিস্তানে একটি সাধারণ ভাষা প্রচলনের প্রস্তাব দিলে তিনি এর তীব্র বিরোধিতা করেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি মজলুম আদিব (বিপন্ন লেখক) ছদ্মনামে কলকাতার দেশ ও অন্যান্য পত্রিকায় কবিতা লেখেন। কবি শামসুর রাহমান বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য  আদমজী পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার ছাড়াও অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়

তাকে সম্মানিক ডিলিট উপাধি প্রদান করে। ১৯৯৯ সালের ১৮ জানুয়ারি তিনি জঙ্গি সংগঠন হুজি কর্তৃক হামলার শিকার হন। তিনি ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা