স্মরণীয়-বরণীয়

Language Martyr Rafiq Uddin Ahmed

ভাষাসৈনিক শহিদ রফিকউদ্দিন আহমদ। ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতির দাবিতে ভাষা আন্দোলনে তিনি শহিদ হন। রফিকউদ্দিন ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার পারিল বলধারা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি স্থানীয় বায়রা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করে মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র কলেজের বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। পড়ালেখা শেষ না করেই তিনি ঢাকায় এসে বাবার মুদ্রণশিল্প ব্যবসায় যুক্ত হন। পরে তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) হিসাববিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এই কলেজে পড়ার সময়ে তিনি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তার নিজের বিয়ে উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি যখন শুনতে পেলেন বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে মিছিল বের হবে, তখন তিনি ছুটে যান সেই মিছিলে। তৎকালীন সরকার কর্তৃক আরোপিত ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতার সঙ্গে তিনি বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেল প্রাঙ্গণসহ পুরো রাজপথ মিছিলের পদভারে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। মিছিলে পাকিস্তানি পুলিশ নির্বিচারে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করলে মেডিকেল হোস্টেলের ১৭ নম্বর কক্ষের পূর্ব দিকে রফিক উদ্দিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন। পরে পুলিশ তার মৃতদেহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায় এবং পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর প্রহরায় ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। কিন্তু তার কবরের কোনো চিহ্ন রাখা হয়নি। ভাষা আন্দোলনে তার আত্মত্যাগের জন্য ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকারে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে। এছাড়া তার গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রফিকনগর করা হয়। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রামে তার নামে ‘ভাষাশহিদ রফিকউদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভবনের নামকরণ ‘ভাষাশহিদ রফিক ভবন’ করা হয়।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০