Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 1:34 am

স্মরণীয়-বরণীয়

দক্ষিণ এশীয় রাজনীতিতে এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার উল্লেখযোগ্য সমর্থন ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। পুরো নাম ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী। ১৯৭২ সালে তাকে ভারতরত্ন ঘোষণা করা হয়। ইন্দিরা গান্ধী ১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর এলাহাবাদে বিখ্যাত নেহরু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতামহ মতিলাল নেহরু ভারতের প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা ছিলেন। তার পিতা জওহর লাল নেহরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তার ছেলে রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৩৪-৩৫ সালে তিনি কিছুকাল শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীতেও পড়াশোনা করেন। সে সময় বিশ্বকাবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার নাম রাখেন ‘প্রিয়দর্শিনী’। পরবর্তীকালে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমারভিল কলেজে ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি নিয়ে অধ্যয়ন করেন। ইন্দিরা গান্ধী ১৯৩৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন। পিতা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরুর মৃত্যুর পর ১৯৫৯ সালে তিনি তথ্যমন্ত্রী হন। পরে ১৯৩৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৭ সাল এবং ১৯৮০ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত (১৯৮৪) তিন মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গণহত্যা শুরু করলে ২৭ মার্চ শনিবার ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশে গণহত্যার নিন্দা ও স্বাধীনতার প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানান। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি লাভ করেন মেক্সিকান একাডেমি পুরস্কার (১৯৭২)। ১৯৮৪ সালের এই দিনে নিজের দেহরক্ষীর হাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শ্রীমতী গান্ধী ‘দ্য ইয়ার্স অব চ্যালেঞ্জ’, ‘রিমেমবার্ড মোমেন্টস’, ‘দ্য ইয়ার্স অব এনডেভার’, ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ইন্টারনাল ইন্ডিয়া’ কিছু গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি ভারতরত্ন উপাধি অর্জন করেছিলেন। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের চেয়ারপারসনসহ অসংখ্য সম্মান লাভ করেন। ২০২০ সালে ইন্দিরা গান্ধীকে টাইম পত্রিকা কর্তৃক বিগত শতাব্দীর সংজ্ঞা-নির্ধারণকারী ১০০ শক্তিশালী নারীর তালিকাভুক্ত করা হয়। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘স্বাধীনতা সম্মাননা’ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

কাজী সালমা সুলতানা