স্মরণীয়-বরণীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ আহসানউল্লাহ ওরফে আহসানউল্লাহ মাস্টারের আজ ৭১তম জন্মবার্ষিকী। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। আহসানউল্লাহ মাস্টার ১৯৫০ সালের ৯ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা জেলার (বর্তমান গাজীপুর) পুবাইল ইউনিয়নের হায়দরাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় নিজ গ্রামের হায়দরাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ১৯৬৫ সালে তিনি এসএসসি পাস করে তৎকালীন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৭০ সালে ডিগ্রি পাস করার পর আহসানউল্লাহ টঙ্গীর নোয়াগাঁও এমএ মজিদ মিয়া হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি একই বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতা ছাড়াও তিনি টঙ্গী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আহসানউল্লাহ মাস্টারের রাজনীতিতে হাতেখড়ি। তখন তিনি ছাত্রলীগ করতেন। ১৯৬৬ সালে বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে ১১ দফার আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার আগে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটক ও নির্যাতিত হয়েছিলেন। পরে ভারতের দেরাদুনের তান্দুয়া থেকে গেরিলা ট্রেনিং নিয়ে পুবাইল, টঙ্গী, ছয়দানাসহ বিভিন্ন জায়গায় গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ জয়দেবপুরের ক্যান্টনমেন্টের বাঙালি সৈন্যদের নিরস্ত্র করতে ঢাকা থেকে আসা পাকিস্তানি শত্রুবাহিনীকে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দিতে জনতাকে উদ্বুদ্ধ করার কাজে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। আশির দশকে আহসানউল্লাহ মাস্টার স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি রাজনীতি ছাড়াও শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালের ৭ মে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে তিনি নিহত হন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০