Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:39 am

স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ৯নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) এমএ জলিলের আজ ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ১৯৪২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি প্রবেশিকা এবং ১৯৬১ সালে আইএ পাস করেন। ১৯৬২ সালে তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে ট্রেইনি অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে তিনি ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি পান এবং ১২নং ট্যাংক ক্যাভালরি রেজিমেন্ট অফিসার হিসেবে তৎকালীন পাক-ভারত যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন? ১৯৬৬ সালে যুদ্ধবিরতির পর তিনি পাকিস্তান একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন। পরে মুলতানে কর্মরত থাকাকালে তিনি ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ছুটিতে তিনি বরিশালে আসেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি নবম সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব লাভ করেন। মেজর (অব.) এমএ জলিল ১১টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ৮০ হাজার সদস্য নিয়ে বিরাট মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলেন। তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সাতক্ষীরা, খুলনা, পটুয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করেন। কিন্তু নভেম্বর মাসে তাকে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর দেশের প্রথম রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি এই দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লব ব্যর্থ হলে কর্নেল তাহেরের সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হন, বিচারে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ১৯৮০ সালের ২৪ মার্চ তিনি মুক্তিলাভ করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি জাসদ ত্যাগ করে জাতীয় মুক্তি আন্দোলন নামে একটি দল গঠন করেন। মেজর জলিল বেশকিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে ‘সীমাহীন সময়’, ‘দৃষ্টিভঙ্গী ও জীবনদর্শন’, ‘অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

কাজী সালমা সুলতানা