স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও বংশীবাদক বারী সিদ্দিকীর আজ চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি মূলত গ্রামীণ লোকসংগীত ও আধ্যাত্মিক ধারার গায়ক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। বারী সিদ্দিকী ১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলায় এক সংগীতজ্ঞ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে মায়ের কাছে তার প্রথম গান শেখায় হাতেখড়ি। পরে হাইস্কুলে পড়ার সময় তিনি জেলা নেত্রকোনার শিল্পকলা একাডেমিতে পদ্ধতিগতভাবে সংগীত শেখা শুরু করেন। তিনি ওস্তাদ গোপাল দত্ত, ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, ওস্তাদ পান্নালাল ঘোষসহ অসংখ্য গুণী শিল্পীর সান্নিধ্য লাভ করেন ও বাঁশি প্রশিক্ষণ নেন। সত্তরের দশকে তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হন। ধ্রুপদী সংগীতেও পড়াশোনা করেন। প্রথম তিনি নিজেকে বাঁশিবাদক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। গায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে তিনি দু’দশক ধরে বাঁশি বাজিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করার পর তিনি জড়িয়ে পড়েন সংগীতের সঙ্গে। নব্বইয়ের দশকে তিনি ভারতের পুনাতে পণ্ডিত বিজি কারনাডের কাছে বাঁশি প্রশিক্ষণ নেন। দেশে ফিরে তিনি বাঁশি বাজানোর সঙ্গে উচ্চাঙ্গ সংগীত পরিবেশনা শুরু করেন। এছাড়া তিনি লোকগীতির সঙ্গে ক্ল্যাসিক মিউজিকেরও গান করেন। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে কথাসাহিত্যিক ও চিত্রনির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ‘রঙের বাড়–ই’ নামের একটা অনুষ্ঠানে তিনি প্রথম সংগীত পরিবেশন করেন। তিনি হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন।

বারী সিদ্দিকী ১৯৯৯ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাঁশি সম্মেলনে উপমহাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ও গানের কথা লিখেছেন এবং নাটকে অভিনয়ও করেন। তার গাওয়া জনপ্রিয় গানÑ‘শুয়া চান পাখি, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘সাড়ে তিন হাত কবর’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘তুমি থাকো কারাগারে’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’ প্রভৃতি। ২০১৩ সালে তিনি ‘পাগলা ঘোড়া’ নাটকে অভিনয় করেন। ২০১৭ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০