প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানের আজ শততম জন্মবার্ষিকী। তিনি ড্রইংয়ে দক্ষতা অর্জন করে বিশ্বব্যাপী সুনাম লাভ করেন। তিনি ‘পটুয়া কামরুল হাসান’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর কলকাতায় জš§গ্রহণ করেন। তার পুরো নাম আবু শরাফ মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তিনি ১৯৪৭ সালে ফাইন আর্টসে পাস করেন। হাসান ভৌত অনুশীলনে খুব কৌতূহলী ছিলেন এবং একটি ভৌত অনুশীলন প্রতিযোগিতায় ১৯৪৫ সালে চ্যাম্পিয়ন হন। পাকিস্তান আন্দোলনের সময় তিনি যোগদান করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় আসেন। কামরুল হাসান চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি বয়েজ-স্কাউট, শরীরচর্চা, ব্রতচারী আন্দোলন, শিশু সংগঠন মণিমেলা, মুকুল ফৌজ প্রভৃতি কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি ঢাকা চলে আসেন এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে মিলে ঢাকায় আর্ট স্কুল (চারুকলা) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ঢাকায় চিত্রকলার চর্চা ও প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন আর্ট গ্রুপ। এছাড়া ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের নকশা কেন্দ্রের প্রধান নকশাবিদের দায়িত্ব পালন করেন। কামরুল হাসান ১৯৬৯ সালে অসহযোগ আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও বেতার দপ্তরের শিল্প বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। এ সময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহহিয়া খানের একটি পোস্টার এঁকে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। পোস্টারটির শিরোনাম ছিল ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে।’ ১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে তিনি আরেকটি স্কেচ আঁকেন ‘দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে’ শিরোনামে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারি মনোগ্রাম তৈরি করার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পটুয়া কামরুল হাসান দেশে-বিদেশে অনেক একক ও বহু যৌথ চিত্র প্রদর্শনীতেও অংশ নেন। চিত্রকলায় অসাধারণ অবদানের জন্য কামরুল হাসান অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হন। তার চিত্রকর্ম অবলম্বনে যুগোসøাভাকিয়া ও বাংলাদেশ সরকার স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
কাজী সালমা সুলতানা