চিত্রশিল্পী ও শিক্ষক কাজী আব্দুল বাসেতের আজ ৮৬তম জম্নবার্ষিকী। তিনি চারুকলার মূর্ত ও বিমূর্ত উভয় ধারায়ই অবদান রেখেছেন। নারী অবয়ব বিশেষত, মাতৃরূপ অঙ্কনে ছিল তার বিশেষ আগ্রহ। বাংলাদেশে বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারার শিল্প রচনায় যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, কাজী আবদুল বাসেত তাদের অন্যতম। তবে এ ধারায় নিবিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কখনও অবয়বধর্মী চিত্র রচনার অভ্যাসকে তিনি বিসর্জন দেননি। শিল্পীজীবনের শুরুতে তিনি অ্যাকাডেমিক রীতি অনুসরণ করে অবয়বধর্মী কাজে দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি জলরং, তেলরং, প্যাস্টেল প্রভৃতি মাধ্যমে চিত্র রচনা করেছেন। অপরদিকে ব্যবহার করেছেন ছাপচিত্রের বিভিন্ন মাধ্যমকেও। রেখাচিত্রেও তিনি দেখিয়েছেন পারদর্শিতা। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণকালে তিনি বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারায় প্রভাবিত হন। শিকাগোতে তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন পল উইগার্ড, হ্যান্স হফম্যান ও বাবভিক্টের মতো শিক্ষকদের। কাজী আবদুল বাসেত ১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় জš§গ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস মুন্সীগঞ্জের রামপাল গ্রামে। কাজী আবদুল বাসেত ঢাকার সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে ১৯৫১ সালে প্রবেশিকা এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে চারুলায় স্নাতক কোর্স শেষে ঢাকার নবাবপুর সরকারি হাইস্কুলে চারুকলার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৩-৬৪ সালে তিনি ফুলব্রাইট ফেলোশিপের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে চিত্রশিল্পে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করন। উচ্চতর শিক্ষা শেষে কাজী আবদুল বাসেত ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে ড্রয়িং ও পেইন্টিং বিভাগের প্রধান হন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কাজী আবদুল বাসেত ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক, ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্প সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯১ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। কাজী আবদুল বাসেত ২০০২ সালের ২৩ মে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা