স্মরণীয়-বরণীয়

ভাওয়াইয়া গানের খ্যাতিমান শিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমেদের আজ ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি প্রাইড অব পারফরম্যান্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে (১৯৮১) ভূষিত হয়েছেন। তার সুরেলা কণ্ঠে পল্লিগান আজও অদ্বিতীয়। লোকসংগীত পরিচালক, সুরকার ও গায়ক আব্বাসউদ্দীন আহমেদ ১৯০১ সালের ২৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহাকুমার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  ১৯১৯ সালে তিনি তুফানগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু এর পরপরই তিনি চলে যান কুচবিহারে। ১৯২১ সালে তিনি কুচবিহার কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। এর কিছুদিন পরেই কলকাতা এসে তিনি সংগীত জগতে প্রবেশ করেন। সে সময় তার কোনো সংগীত ওস্তাদের তালিম নেয়া ছিল না। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান শুনেই তিনি গানের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং নিজের চেষ্টায় গান গাওয়ার চর্চা করেন। পরে অবশ্য কিছু সময়ের জন্য তিনি ওস্তাদ জমিরউদ্দীন খাঁর কাছে উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম নেন। এরপর কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুপ্রেরণা এবং সহযোগিতায় আব্বাসউদ্দীনের কণ্ঠে ইসলামি ও ভাওয়াইয়া গানের রেকর্ড হয়। এ কে ফজলুল হকের মন্ত্রিত্বের সময় তিনি রেকর্ডিং এক্সপার্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। ১৯৪৭ সালের পর দেশে ফিরে তিনি তদানীন্তন পাকিস্তান রেডিওতে এডিশনাল সং অর্গানাইজার হিসেবে চাকরি শুরু করেন। আব্বাসউদ্দীন আহমেদ আধুনিক গান, স্বদেশি গান, ইসলামি গান, পল্লিগীতি, উর্দুগান ছাড়াও চারটি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় ও গান করেছেন। তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, নিউইয়র্ক, লন্ডন, প্যারিস, টোকিও, মেলবোর্নসহ পৃথিবীর বহু দেশে ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করেছেন । তার কণ্ঠে রেকর্ড করা গানের সংখ্যা প্রায় ৭০০। তার মধ্যেÑ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই, তোরষা নদী উথাল পাতাল, কারবা চলে নাও, প্রেম জানে না রসিক কালাচান’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কলকাতার গ্রামোফোন কোম্পানি তার দুটি আধুনিক গান রেকর্ড করে। আব্বাসউদ্দীন আহমেদ রচিত একমাত্র গ্রন্থ ‘আমার শিল্পীজীবনের কথা’। ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংগীত জগতের এই গুণী শিল্পী মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০