Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 3:12 am

স্মরণীয়-বরণীয়

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ও তথ্যচিত্র নির্মাতা রবীন সেনগুপ্ত। স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১২ সালে তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধে বন্ধু সম্মাননা’ পদকে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার। রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীনের লাশের ছবিটি তুলেছিলেন তিনি। তার প্রকাশিত আলোকচিত্র-সংবলিত গ্রন্থের নাম ‘চিত্রসাংবাদিকের ক্যামেরায় মুক্তিযুদ্ধ।’ রবীন সেনগুপ্ত ১৯৩০ সালের ২০ ডিসেম্বর আগরতলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার আদি নিবাস ঢাকার বিক্রমপুরে। তিনি উমাকান্ত একাডেমি ও বিশ্বভারতী থেকে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি ফ্রিল্যান্স চিত্রসাংবাদিক রূপে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৬-১৯৬২ সালে  আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবন নিয়ে ত্রিপুরার প্রথম রঙিন ছবি নির্মাণ করেন তিনি। ১৯৫৯ সালে তিনি ব্রাজিলে আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি ‘দি রয়েল ফটোগ্রাফি সোসাইটি অব গ্রেট ব্রিটেন’-এর সদস্যপদ ও ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া ফটোগ্রাফিরও সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৬২ সালে তার নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘দি টেইলস অব ট্রাইবাল লাইফ অব ত্রিপুরা’ হেলসিঙ্কিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। তার নির্মিত ত্রিশটিরও বেশি ডকুমেন্টারি ছবির মধ্যে রয়েছে হ্যান্ডলুম অ্যান্ড হ্যান্ডক্রাফট অব ইন্ডিয়া, গ্লিমসেস অব ত্রিপুরা, প্রিয়দর্শিনী ইন্দিরা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ , জনগণের জয় শারদোৎসব ইত্যাদি। রবীন সেনগুপ্ত পবেষণামূলক প্রবন্ধকার ও লেখক হিসেবেও সুনাম অর্জন করেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দিনে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে তিনিও ছিলেন ঢাকায়। রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের দৃশ্য ধারণ করেছেন তিনি। তিনি স্টেটসম্যান, যুগান্তর, অমৃতবাজার, আনন্দবাজার, দ্য স্টেটসম্যান, হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ডসহ ভারতের বিভিন্ন পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।  তিনি  ২০১৭ সালের ৭ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা