মার্কসবাদী তাত্ত্বিক, সমাজ দার্শনিক ও বিপ্লবী রোসা লুক্সেমবুর্গের আজ ১৫১তম জন্মবার্ষিকী। তিনি পোল্যান্ড সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তাত্ত্বিক ছিলেন।
রোসা লুক্সেমবুর্গ ১৮৭১ সালের এই দিনে রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত পোল্যান্ডের সামোসক নামক স্থানে জš§গ্রহণ করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে জন্মালেও সেটা তার জীবনে কোনো প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দাঁড়াতে পারেনি। কিশোর বয়সেই তিনি নিষিদ্ধঘোষিত বামপন্থি দল প্রোলেতারিয়েতে যোগ দেন। দুই বছর পর গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি সুইজারল্যান্ড গিয়ে জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। দর্শনগত দিক থেকে রোজা বৈপ্লবিক মার্কসবাদী চিন্তাধারায় বিশ্বাসী ছিলেন। ১৮৯৮ সালে রোজা জার্মান নাগরিকত্ব পান। তিনি জার্মান সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এসপিডি) রাজনৈতিক চিন্তাধারায় বিশ্বাসী থাকলেও এসপিডি ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। ১৯১৮ সালের নভেম্বরে তিনি ডি রোটে ফাহরে (বাংলা: লাল পতাকা) পত্রিকা চালু করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের সমর্থন দেয়ায় রোজা ও তার সঙ্গীরা এসপিডি ত্যাগ করেন। এজন্য তার আড়াই বছরের কারাদণ্ড হয়। জেলে বসেই তিনি যুদ্ধরত
সরকারের বিপক্ষে লিখতে থাকেন। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং সমমনা সব বামপন্থি দল নিয়ে গঠন করেন জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টি। ১৯১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি তিনি এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পর রোজা লুক্সেমবুর্গ, কার্ল লিবটকেনেখটসহ হাজার হাজার বিপ্লবী ধরা পড়েন এবং তাদের হাতে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরে রোজা লুক্সেমবুর্গের মৃতদেহ পরে নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
বিপ্লব ব্যর্থ হলেও জার্মানি তথা সারাবিশ্বের বাম রাজনীতিতে রোসা লুক্সেমবার্গ একটি স্মরণীয় নাম। জার্মানির বার্লিন শহরে তার একাধিক স্মৃতিসোধ ও রাজপথের নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি উ-বান (পাতাল রেল) স্টেশন তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।
কাজী সালমা সুলতানা