স্মরণীয়-বরণীয়

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এই দিনে কলঙ্কময় জঘন্যতম গণহত্যার সূচনা হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ সারাদেশে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে। বাঙালির মুক্তি আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে সংঘটিত এ গণহত্যায় শহীদ হন ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অগণিত মানুষ। পাকিস্তানি হায়েনাদের হাত থেকে রক্ষা পাননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও।  ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বাঙালিদের জন্য ছিল একটি ‘কালরাত’ এই অপারেশনের মূল লক্ষ্য ছিল গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ। প্রথমে পুরো ঢাকা শহরে হামলা চালানো হয়। ওই রাতে অনেক শিক্ষককে হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক এএনএম মনীরুজ্জামান, ড. জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, ড. ফজলুর রহমান খান, ড. এ মুকতাদির, শরাফাত আলী, এ আ কে খাদেম, অনুদ্ধেপায়ন ভট্টাচার্য, সা’দত আলী, এমএ সাদেক প্রমুখ। এছাড়া ওই রাতে ইকবাল হল (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল), জগন্নাথ হল, ফজলুল হক, ঢাকা হল (বর্তমানে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল) এবং এসএম হলের অনেক আবাসিক ছাত্রকে হত্যা করা হয়। শুধু ঢাকা শহরে সেদিন কতজনকে হত্যা করা হয়েছিল, তার হিসাব পাওয়া যায়নি। কারণ অনেক দেহ পুড়ে গিয়েছিল বা গণকবর দেয়া হয়েছিল। তবে সে সংখ্যা কমপক্ষে ১০ হাজারের বেশি হবে।  গণহত্যার এই বীভৎস দৃশ্য দেখলে পাগল হওয়ার উপক্রম হবে বলে অনেকেই উল্লেখ করেন। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে দিনটিকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে অভিহিত করতে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। ২৫ মার্চের দিবাগত রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পিপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে প্রেরিত বার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। ওই সময়েই বাঙালির প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়, শুরু হয় স্বাধীনতাযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধ।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০