স্মরণীয়-বরণীয়

প্রখ্যাত সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিক আবুল কালাম শামসুদ্দীন। তিনি ১৮৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৯ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করার পর কলকাতার রিপন কলেজে বিএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। আবুল কালাম শামসুদ্দীন ১৯২৩ সালে দৈনিক মোহাম্মদী পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরে তিনি সাপ্তাহিক মোসলেম জগৎ, দি মুসলমান, দৈনিক সোলতান, মাসিক মোহাম্মদী প্রভৃতি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি দৈনিক আজাদে যোগদান করে ১৯৪০-৬২ সাল পর্যন্ত সেখানে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি দৈনিক পাকিস্তানের সম্পাদক নিযুক্ত হন ও ১৯৭২ সালে অবসর  গ্রহণ করেন। পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর (১৯১৯) আবুল কালাম শামসুদ্দীন  কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯২৭ সালে তিনি মুসলিম লীগের সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৪৬ সালে আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ও  ১৯৪৯ সালে পূর্ববঙ্গ সরকারের ভাষা-কমিটির সদস্য হন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে তিনি আইন পরিষদের সদস্যপদ ও মুসলিম লীগ সংসদীয় পার্টি ত্যাগ করেন। বায়ান্নর ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল সামনে প্রথমবার যে শহিদ মিনার নির্মিত হয়, আবুল কালাম শামসুদ্দীন তার উদ্বোধন করেন। ভাষা আন্দোলনে তার সম্পাদিত ‘দৈনিক আজাদ’ পত্রিকা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। তিনি নিয়মিত বাংলা ভাষার দাবি-সংক্রান্ত সম্পাদকীয় প্রকাশ করতেন। আবুল কালাম রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘পলাশী থেকে পাকিস্তান’ ও ‘অতীত দিনের স্মৃতি’ কচিপাতা, অনাবাদি জমি, ত্রিস্রোতা, খরতরঙ্গ ও আত্মজীবনী, অতীত দিনের স্মৃতি। আত্মজীবনী হিসেবে অতীত জীবনের স্মৃতি তার উৎকৃষ্ট রচনা। তিনি সরকার কর্তৃক সিতারা-ই-খিদমত ও সিতারা-ই-ইমতিয়াজ উপাধিতে ভূষিত হন। কিন্তু ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সরকারি দমননীতির প্রতিবাদে তিনি উভয় খেতাব বর্জন করেন। আবুল কালাম শামসুদ্দীন বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ১৯৭৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন।  ১৯৭৮ সালের ৪ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০