বিশ্বখ্যাত পরাবাস্তববাদী চিত্রকর সালভাদর দালি। বিংশ শতাব্দীতে পাশ্চাত্য চিত্রকলা শুধু ছবি আঁকায় সীমাবদ্ধ ছিল না। তা জন্ম দিয়েছিল নানা শিল্প আন্দোলনেরও। এসব আন্দোলন ছবির সঙ্গে সঙ্গে কবিতা, নাটক, সিনেমা ইত্যাদি নানা শিল্প মাধ্যমকে প্রভাবিত করে। এমন সব প্রভাব বিস্তারকারীদের একজন শিল্প আন্দোলনের একজন হলেন সালভাদোর দালি। তিনি ১৯০৪ সালের ১১ মে তিনি স্পেনের উত্তর কাতালোনিয়ার ফিগুয়েরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম সালভাদোর ডোমিঙ্গো ফেলিপি জেসিন্তো দালি ই দোমেনেখ। বিংশ শতাব্দীতে প্রভাব বিস্তারকারী শিল্প আন্দোলনের যারা উদগাতাদের একজন সালভাদোর দালি। সালভাদোর দালি ছোটবেলা থেকে ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। ১৯১০ সালে ছয় বছর বয়সে তিনি আঁকেন ‘ল্যান্ডস্কেপ নিয়ার ফিগারাস। ১৯২২ সালে দালি মাদ্রিদের রেসিডেন্স দ্য স্টুডেন্টের ফাইন আর্টস বিভাগে যোগ দেন। সেখানেই তার পরিচয় ঘটে স্পেনের বিখ্যাত কবি ও নাট্যকার লোররকা ও চলচ্চিত্রকার লুই বুনুয়েলের সঙ্গে। ১৯২৫ সালে দালির প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী হয় বার্সেলোনায়। তিনি জলরঙ, তেলরঙ, ড্রইং, লিথোগ্রাম, কোলাজ, কাচ ও ক্রিস্টাল পাথরের মাধ্যমে কাজ করেন। ১৯২৬ সালের প্রথম বারের মতো ডলি প্যারিসে যান, সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় বিখ্যাত শিল্পী পিকাসোর। ১৯২৯ সালে তার এগারটি পেইন্টিং নিয়ে প্যারিসে প্রথম বারের মতো চিত্রপ্রদর্শনী করেন। দালি একাধারে চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, গ্রাফিক্স ডিজাইনার। সাঁইত্রিশ বছর বয়সে তিনি জীবনবৃত্তান্ত ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব সালভেদর দালি’ রচনা করেন। দালির বিখ্যাত ছবির মধ্যে দ্য পারসিসটেন্স অব মেমোরি, দ্য গ্রেট মাসটারবেটর ১৯২৯ ‘দ্য পারসিসটেন্স অব মেমোরি, দ্য বাস্কেট অব বেড, দ্য ফেস অব ওয়ার, টুনা ফিশিং, মেটামরফোসিস অব নার্সিসাস, দ্য বার্নিং জিরাফ, ভিলাবার্টিন, মর্ফোলজিক্যাল ইকো, স্টিল লাইফ মুভিং ফাস্ট, আন চিন এন্ডালু ইত্যাদি। তিনি আলফ্রেড হিচককের সঙ্গেও কাজ করেন। ‘স্পেলবাউন্ড’ মুভিতে তিনি ড্রিম সিকুয়েন্স তৈরি করেন। ওয়াল্ট ডিজনির সঙ্গে তিনি একটি কার্টুন ফিল্ম তৈরির কাজেও হাত দেন। ১৯৪৪ সালে তিনি তার একমাত্র উপন্যাস প্রকাশ করেন নাম ‘হিডেন ফেসেস’। তিনি একটি অপেরাও লিখেন। ভাস্কর্য নির্মাণ, আসবাব ও বইয়ের অলংকরণ, ফ্যাশন ডিজাইন প্রভৃতি নান্দনিক শিল্পচর্চাতেও তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৮৯ সালের ২৩ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা