Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 12:24 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

বিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক কাজী মোতাহার হোসেনের আজ ১২৫তম জš§বার্ষিকী। তিনি ১৮৯৭ সালের ৩০ জুলাই কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাগমারা গ্রামে। কাজী মোতাহার হোসেন ১৯১৫ সালে কুষ্টিয়া মুসলিম হাই স্কুল থেকে মেট্রিক, ১৯১৭ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯১৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএ, ১৯২১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। ১৯৩৮ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএ  এবং ১৯৫১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে পিএইচডি করেন।  কাজী মোতাহার হোসেন ১৯২১ সালে ছাত্রাবস্থায়ই নবপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ডেমোনেস্ট্রেটর হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাতত্ত্ব তথ্যগণিত বিষয়ের অধ্যাপক এবং ১৯৬১ সালে অবসরের পর পরিসংখ্যান বিভাগের ‘সুপারনিউমারারি প্রফেসর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরিসংখ্যান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালকেরও তিনি দায়িত্ব পালন করেন । কাজী মোতাহার হোসেন ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইমেরিটাস প্রফেসর’ পদে নিযুক্ত হন। ১৯২৬ সালে তিনি ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ প্রতিষ্ঠায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা বানান ও লিপি সংস্কার কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা -‘নজরুল কাব্য পরিচিতি’, ‘সিম্পোজিয়াম’, ‘গণিত শাস্ত্রের ইতিহাস’, ‘আলোক বিজ্ঞান’, ‘প্লেটোর সিম্পোজিয়াম’ ইত্যাদি। ১৯৬১ সালে তিনি প্রতিক্রিয়াশীলদের বিরোধিতার মুখে ঢাকায় রবীন্দ্র-জš§ শতবার্ষিকী পালনে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী রেডিও-টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধের পদক্ষেপ নিলে তিনি প্রতিবাদ জানান। ১৯৭৫ সালে ড. মোতাহার হোসেন ‘জাতীয় অধ্যাপক’ হিসেবে সম্মানিত হন। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিএসসি ডিগ্রিসহ অনেক পদ লাভ করেন। তিনি একজন খ্যাতিমান দাবাড়ু এবং দাবা সংগঠকও ছিলেন। জ্ঞানতাপস ড. কাজী মোতাহার হোসেন ১৯৮১ সালের ৯ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা