Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:57 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ী গ্রামের এক সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই পিতা ওস্তাদ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে তার সংগীত শিক্ষা শুরু। বেহালা বাজাতে গিয়েই তিনি চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বেতারের শিশুদের অনুষ্ঠানে বেহালাবাদক ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন। এরপর প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। তৎকালীন বড় সংগীত পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে তার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৫ সালে ‘সন্ধিক্ষণ’ চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি প্রায় ৩০০ চলচ্চিত্রের গানে সুরারোপ করেন। রেডিও, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার গানের সুরকার তিনি। আলাউদ্দিন আলী সংগীত পরিচালক হিসেবে সাতবার এবং গীতিকার হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৯, ১৯৮০ এবং ১৯৮১ সালে পরপর তিন বছর চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে হ্যাটট্রিক করেন। তিনি মোট আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেছেন। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তার সুরে গান করে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন। তার সুরারোপিত গানের মধ্যে একবার যদি কেউ ভালোবাসত, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, ‘দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়’, ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ’, ‘এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়’, ‘হয় যদি বদনাম হোক আরও’, ‘প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে। ২০২০ সালের ৯ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা