Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:27 am

স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলার বীর ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর ১১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ভারতে ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকেই বিরোধিতা করেন। ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর থানার মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০৩ সালে তিনি মেদিনীপুরের কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন এবং এখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তিনি পড়াশোনা করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী ও স্বদেশি আন্দোলনের দ্বারা ক্ষুদিরাম প্রভাবিত হন এবং পড়াশোনা ছেড়ে সত্যেন বসুর গোপন বিপ্লবী সংগঠন অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন। এ সময় সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য তিনি শরীরচর্চার সঙ্গে নৈতিক ও রাজনৈতিক শিক্ষা এবং অস্ত্র চালনা শেখেন। এরপর তার পূর্ণ ধ্যানজ্ঞান হয়ে ওঠে স্বাধীনতা সংগ্রাম। ১৯০৭-এর ৬ ডিসেম্বর নারায়ণগড় রেলস্টেশনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোয় তিনি অংশগ্রহণ করেন। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ক্ষুদিরাম তার গুণাবলির জন্য সবার চোখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। ১৯০৬ সালে ব্রিটিশবিরোধী ইশতেহার বণ্টনকালে ক্ষুদিরাম প্রথম পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ক্ষুদিরাম বঙ্গভঙ্গবিরোধী ও ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনের ক্রমাগত একাধিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন। সে সময় ইংরেজ শাসক বঙ্গভঙ্গবিরোধী ও স্বদেশি আন্দোলনের কর্মীদের ওপর কঠোর সাজা ও দমননীতি প্রয়োগ করে আসছিল। সে কারণে যুগান্তর বিপ্লবী দল কলকাতার প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই হত্যা কার্যকর করার দায়িত্ব পড়ে বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী ও ক্ষুদিরাম বসুর ওপর। ১৯১৮ সালের ৩০ এপ্রিল তারা কিংসফোর্ডের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়েন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ওই গাড়িতে ছিলেন আরেক ব্রিটিশ অফিসার প্রিঙ্গল কেনেডির স্ত্রী ও মেয়ে। তারা এই ঘটনায় মারা যান। বেঁচে যান অত্যাচারী কিংসফোর্ড। প্রফুল্ল চাকী পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগেই আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনার পর ক্ষুদিরাম পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। তিনি বোমা নিক্ষেপের সব দায় নিজের ওপর নিয়ে নেন। বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়।  ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ক্ষুদিরামকে  ফাঁসিতে মৃত্যু কার্যকর করা হয়। সেদিন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর ৮ মাস ৮ দিন।

কাজী সালমা সুলতানা