স্মরণীয়-বরণীয়

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ ফরহাদের আজ ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ১৯৩৮ সালের ৫ জুলাই পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার জমাদারপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মোহাম্মদ ফরহাদ ১৯৫২ সালে মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে দিনাজপুর জিলা স্কুলের ছাত্র হিসেবে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। দিনাজপুরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে অধ্যয়নকালে ১৯৫৪ সালে তিনি বামপন্থি আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি কলেজ ছাত্র-সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি হন। সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। ভাষা আন্দোলনের পরপরই ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন’ গঠিত হলে ১৯৫৩-৫৪ সালে বোদা-পঞ্চগড় প্রভৃতি এলাকায় তিনি ছাত্র সংগঠন গড়ে তুলেন। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান সরকার ৯২-ক ধারা জারি করে নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করলে মোহাম্মদ ফরহাদও গ্রেপ্তার হন ও আট মাস কারাভোগ করেন। কারামুক্তির পর ১৯৫৫ সালে তিনি দিনাজপুর কমিউনিস্ট পার্টির আনুষ্ঠানিক সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৬২ সালে আইয়ুববিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। মোহাম্মদ ফরহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাসের পর  কিছুকাল দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক ও ১৯৬৮ সালে কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম কংগ্রেসে মোহাম্মদ ফরহাদ কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গঠিত ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর অন্যতম প্রধান সংগঠক ও নেতা ছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যা-পরবর্তীকালে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেন। ১৯৭৭ সালে সরকার কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তাকে বিনা বিচারে আটক করে। ১৯৮০ সালে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটেও তিনি গ্রেপ্তার হন। ১৯৮৬ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালের ৯ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ ‘ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান’।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০