স্মরণীয়-বরণীয়

প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী, শিল্পশিক্ষক আনোয়ারুল হকের আজ ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। দেশের চিত্রকলার প্রতিষ্ঠা, চর্চা ও বিকাশে তিনি ছিলেন নিরলস ও নিবেদিতপ্রাণ। বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পেছনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ও  আর্ট ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আনেয়ারুল হক ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই আফ্রিকার উগান্ডায় জš§গ্রহণ করেন। ৮ বছর বয়সে তিনি সপরিবারে কলকাতা চলে আসেন এবং শৈশবে ও কৈশোরের সময়গুলো কলকাতাতেই কাটে তার। ১৯৩৫ সালে তিনি কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তি হন। তৎকালীন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ছবি আঁকা একপ্রকার নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৪১ সালে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে আর্ট স্কুল থেকে ‘টিচারশিপ’ কোর্স শেষ করে কিছুদিন স্বাধীনভাবে চিত্রকলা চর্চা করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি ড্রইং শিক্ষক হিসেবে ফরিদপুর জিলা স্কুলে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে হাওড়া জিলা স্কুল, কলকাতা আর্ট স্কুল, চট্টগ্রাম নর্মাল স্কুল এবং পূর্ব পাকিস্তান আর্ট ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেছেন। পরে কলকাতা আর্ট স্কুলে বাণিজ্যিক শিল্পকলা বিভাগে তিনি যোগ দেন। জল রং ও তেল রংÑ এই দুটো মাধ্যমে তিনি ছবি এঁকেছেন। চিত্রশিল্পী আনোয়ারুল হক ১৯৪৫ সালে সর্বভারতীয় শিল্পকলা প্রতিযোগিতায় ‘জল রং চিত্রে’ শ্রেষ্ঠ শিল্পীর সম্মান লাভ করেন। জীবনের বিভিন্ন পর্বে বাস্তবধর্মী, প্রকৃতিনির্ভর ও পরাবাস্তববাদী শিল্প সৃষ্টিতে তার আগ্রহ ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর তিনি চট্টগ্রামের নরমাল স্কুলে চিত্রাঙ্কন শিক্ষক পদে যোগদান করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় আসেন এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, শফিউদ্দিন আহমেদ, কামরুল হাসানসহ প্রমুখ শিল্পীদের সঙ্গে ঢাকায় গড়ে তোলেন শিল্প-শিক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘পূর্ব-পাকিস্তান সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট’ (বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট)।  ১৯৮১ সালের ১৮ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বঙ্গভবন, দিল্লি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তার কিছু চিত্রকর্ম সংগৃহীত রয়েছে । 

-কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০