স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নবম সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুল জলিলের আজ ৩৪তম মৃত্যুবাষিকী। তিনি মেজর (অব. ) এম এ জলিল নামেই বেশি পরিচিত। মেজর এম এ জলিল ১৯৪২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুরে জš§গ্রহণ করেন। তিনি উজিরপুর ডব্লিউবি ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন থেকে ১৯৫৯ সালে তিনি ম্যাট্রিক, ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের মারি ইয়ং ক্যাডেট ইনস্টিটিউশন থেকে আইএ পাস করেন। ১৯৬২ সালে তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে ট্রেনি অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে তিনি ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি পান এবং ১২নং ট্যাঙ্ক ক্যাভালরি রেজিমেন্ট অফিসার হিসেবে তৎকালীন পাক-ভারত যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে যুদ্ধবিরতির পর তিনি পাকিস্তান একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন। পরে মুলতানে কর্মরত থাকাকালে তিনি ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৭১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ছুটিতে তিনি বরিশালে আসেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি নবম সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব লাভ করেন। মেজর (অব.) এম এ জলিল এগারটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ৮০ হাজার সদস্য নিয়ে বিরাট মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলেন। তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সাতক্ষীরা, খুলনা, পটুয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করেন। কিন্তু নভেম্বর মাসে তাকে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর দেশের প্রথম রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ গঠনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি এই দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লব ব্যর্থ হলে কর্নেল তাহেরের সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হন, বিচারে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ১৯৮০ সালের ২৪ মার্চ তিনি মুক্তিলাভ করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি জাসদ ত্যাগ করে জাতীয় মুক্তি আন্দোলন নামে একটি দল গঠন করেন। মেজর জলিল বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে: সীমাহীন সময়, দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবন দর্শন, অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা  প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

-কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০