জাতীয় অধ্যাপক প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, লেখক, সংস্কৃতি ও সমাজকর্মী কবীর চৌধুরীর একাদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। কবীর চৌধুরী ১৯২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার গোপাইরবাগ গ্রামে। তার ছোট ভাই শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী। কবীর চৌধুরী ১৯৩৮ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৪০ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৩ সালে ইংরেজিতে সম্মান ও ১৯৪৪ সালে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৭-১৯৫৮ সালে তিনি আমেরিকার মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কিন সাহিত্যে এবং ১৯৬৩-১৯৬৫ সালে সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসনে উচ্চতর গবেষণা সম্পন্ন করেন।
সরকারি চাকরির মাধ্যমে কবীর চৌধুরী কর্মজীবন শুরু করেন। স্বল্পকাল শিক্ষাসচিব পদে কর্মরত থাকার পর ১৯৭৪ সালে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকালে তিনি নাট্যকলা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও পাঠদান করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি জাতীয় অধ্যাপকের সম্মান লাভ করেন। তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
কবীর চৌধুরী রচিত, সম্পাদিত ও অনূদিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতেরও বেশি। কবীর চৌধুরী অর্ধশতকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষা, শান্তি ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সমঝোতার উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক ছাড়াও বাংলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু জাতীয় পুরস্কার, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সাহিত্য পুরস্কারসহ দেশে বিদেশে নানা পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তার রচিত গ্রন্থে মধ্যে উল্লেখযোগ্যÑরূপকথার কাহিনী, গবেষণা-প্রবন্ধ, ইউরোপের দশ নাট্যকার, অভিব্যক্তিবাদী নাটক, ছয় সঙ্গী, সপ্তরথী, মানুষের শিল্পকর্ম, শহীদের প্রতীক্ষায়, সেই নিরালা প্রান্তর, কাহলিল জিবরানের কবিতা, প্রাণের চেয়ে প্রিয় ইত্যাদি।
কাজী সালমা সুলতানা