চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও রাজনীতিবিদ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আজ পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরির সুবাদে মহিউদ্দিন পড়াশোনা করেছেন মাইজদি জেলা স্কুল, কাজেম আলী ইংলিশ হাই স্কুল, আর প্রবর্তক সংঘে। মাধ্যমিক পাশ করার পর কিছুদিন পড়াশোনা করেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে আইন কলেজে ভর্তি হন। ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ায় লেখাপড়া শেষ করতে পারেননি। মহিউদ্দিন চৌধুরী কলেজের ছাত্র থাকাবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। রাজনৈতিক জীবনের শুরতেই তিনি প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ জহুর আহমদ চৌধুরীর সান্নিধ্য লাভ করেন। একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে তিনি আইএসআইয়ের চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমি সদর দপ্তরের কাছে গ্রেপ্তার হন। সে সময় অনেকে ভাবেন তিনি মারা গেছেন। এরই মাঝে একদিন মানসিক রোগীর অভিনয় করে তিনি চট্টগ্রাম কারাগার থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি উত্তর প্রদেশের তান্ডুয়া সামরিক ক্যাম্পে প্রশিক্ষণরত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্কোয়াডের কমান্ডার নিযুক্ত হন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর তিনি যুবলীগ ও পরে শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হন। পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে তিনি মোশতাক সরকারের বিরুদ্ধে ‘মুজিব বাহিনী’ গঠন করেন। সে সময় ‘চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলা’র আসামি করা হলে তিনি কলকাতায় চলে যান। ১৯৭৮ সালে তিনি দেশে ফেরেন। তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলনসহ চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের স্বার্থরক্ষার আন্দোলন করেছেন। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। এর পর থেকে তিনবারে প্রায় ১৭ বছর তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। তিনি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। এছাড়া জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ব্যাপক কাজ করার পাশাপাশি তিনি শ্রমিক আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১৭ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা