Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 10:50 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব, অগ্নিযুগের বিপ্লবী আসফাকউল্লা খান। ১৯২৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর তিনি রামপ্রসাদ বিসমিলের সঙ্গে শহিদ হন। ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাদের উভয়কে একই দিনে আলাদা জেলে ফাঁসি দেয়া হয়। আসফাকউল্লা ১৯০০ সালের ২২ অক্টোবর ভারতের উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি উর্দুতে ভালো কবিতা লিখতেন। অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে ২০২১ সালে তিনি বন্ধু রামপ্রসাদ বিসমিলের সঙ্গে কংগ্রেসে যোগদান করে। ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবীরা বুঝেছিলেন, অহিংসার নরম কথার মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা আসবে না। এক দিন শাহজাহানপুর থেকে লখনৌতে ট্রেন ভ্রমণের সময় পণ্ডিত রামপ্রসাদ বিসমিল খেয়াল করলেন যে, প্রত্যেক স্টেশন মাস্টার তার কেবিনে গার্ডের মাধ্যমে টাকার ব্যাগ আনছেন। সে টাকা  লখনৌ জংশনের সুপারেন্টেন্ডেন্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন তারা ভারতে বসবাসরত ব্রিটিশদের মনে আতক্সক সৃষ্টির জন্য তাদের কার্যক্রম চালানো ও অস্ত্রশস্ত্র কেনার জন্য সরনপুর, লখনৌ চলাচলকারী ৮-ডাউিন প্যাসেঞ্চার ট্রেন বহনকারী সরকারি কোষাগার লুট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বিপ্লবীরা ভারতে বসবাসরত ব্রিটিশদের মনে আতক্সক সৃষ্টির জন্য তাদের কার্যক্রম চালানো ও অস্ত্রশস্ত্র কেনার জন্য  সরনপুর, লখনৌ চলাচলকারী ৮-ডাউিন প্যাসেঞ্চার ট্রেন বহনকারী সরকারি কোষাগার লুট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ৯ আগস্ট, ১৯২৫ তারিখে আসফাকউল্লা খান এবং অন্য আটজন বিসমিলের নেতৃত্বে ট্রেন লুট করেন।  এর এক মাসের মধ্যে সিআইডি সূত্র বের করে প্রায় সব বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু আসফাক ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যার খোঁজ পুলিশ পাচ্ছিল না।

আসফাক লুকিয়ে বারানসি যাত্রা করেন, সেখান থেকে বিহার গমন করেন এবং সেখানে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে দশ মাস কাজ করেন। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন দেশ ত্যাগ করার। কিন্তু কীভাবে দেশ ত্যাগ করবেন তা জানতে তিনি দিল্লি যান, সেখানে তিনি তার একজন পাঠান বন্ধুর সহায়তা নেন এবং সেই বন্ধুটিই বিশ্বাসঘাতকতা করে আসফাককে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন। আসফাকউল্লাহ খানকে ফৈজাবাদ জেলে প্রেরণ করা হয়। এই মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ব্রিটিশ সরকার। ১৯ ডিসেম্বর ১৯২৭ সোমবার তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।

কাজী সালমা সুলতানা