স্মরণীয়-বরণীয়

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের আজ ৮৭তম জš§দিন। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকার, কাহিনিকার, প্রাবন্ধিক, গীতিকার ও সংস্কৃতির ধারক। সৈয়দ শামসুল হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার  শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুড়িগ্রাম মাইনর স্কুলে। সেখানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর কুড়িগ্রাম হাই ইংলিশ স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫০ সালে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিক (বর্তমানের এসএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ সময় তিনি ২০০টির মতো কবিতা রচনা করেন।

তার বাবার ইচ্ছা ছিল তাকে ডাক্তারি পড়াবেন। কিন্তু বাবার ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য করে তিনি ১৯৫১ সালে বম্বে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি এক সিনেমা প্রডাকশন হাউসে সহকারী হিসেবে বেশ কিছুদিন কাজ করেন।

১৯৫২ সালে তিনি দেশে ফিরে এসে জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। কলেজ পাসের পর ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৫৬ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’ প্রকাশিত হয়। এর প্রায় তিন বছর পর ১৯৫৯ সালে তিনি প্রথম মাটির পাহাড় চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখেন। পরে তিনি আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্রের কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেন।

১৯৭১ সালের নভেম্বর সৈয়দ শামসুল হক বিবিসির বাংলা খবর পাঠক হিসেবে চাকরি গ্রহণ করেন। তিনি বিবিসিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের খবরটি পাঠ করেন। সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম গল্প ‘উদয়াস্ত’ লেখা ১৯৫১ সালে ফজলে লোহানী সম্পাদিত ‘অগত্যা’ পত্রিকায় ছাপা হয়। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একদা এক রাজ্যে’ ১৯৬১ সালে প্রকাশিত হয়। তার রচিত ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ নাটকটি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত একটি কাব্যনাটক। তার পরের নাটক ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ ফকিরবিদ্রোহের পটভূমিতে রচিত।

সৈয়দ শামসুল হক কবিতা, উপন্যাস, গল্প, সিনেমা শিল্পে তথা বাংলা সাহিত্যের সব অঙ্গনে কৃতিত্ব দেখিয়ে বহু পুরস্কার ও সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্যÑবাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আলাউল সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, জাতীয় কবিতা পদক, স্বাধীনতা পদক এবং জাতীয় কবিতা সম্মাননা প্রভৃতি। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর  তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০