Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 3:38 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা, বিশিষ্ট বিপ্লবী, কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মণি সিংহের আজ ৩২তম মৃত্যুবাষিকী। 

তিনি ১৯০১ সালের ২৮ জুলাই ময়মনসিংহ জেলার সুসং দুর্গাপুরে জš§গ্রহণ করেন। এখানে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি কলকাতায় যান। ১৯১৪ সালে সেখানে তিনি সশস্ত্র বিপ্লবী গোষ্ঠী ‘অনুশীলন’ দলে যোগ দেন। ১৯২১ সালে মণি সিংহ মহাত্মা গান্ধীর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে শরিক হন। ১৯২৫ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। ১৯২৮ সালে তিনি কলকাতার মাটিয়া বুরুজে কেশরাম কটন মিলে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে সফলতা অর্জন করেন। ১৯৩০ সালে তিনি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক আটক হন। ১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি সুসং দুর্গাপুরে আসেন। এখানে অবস্থানকালে তিনি কৃষকদের সংগঠিত করে টংক প্রথার বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন পরিচালনা করেন। এই আন্দোলন সশস্ত্র রূপ ধারণ করলে পাকিস্তান সরকার ১৯৫১ সালে টংক প্রথা বাতিল করতে বাধ্য হয় কিন্তু মণি সিংহের ওপর হুলিয়া জারি করে তার সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে নেয়।

১৯৫১ সালে মণি সিংহ পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে সরকার কর্তৃক কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কমরেড মণি সিংহ তিনবার পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক এবং তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক কারণে তিনি ১১ বছর কারাভোগ করেন। ১৯৬৭ সালে গ্রেপ্তার হয়ে তিনি মুক্তি পান ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় তিনি রাজশাহী জেলে বন্দি ছিলেন। এ সময় তিনি জেল থেকে পালিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে বামপন্থিদের সংগঠনে ও সমন্বয় সাধনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টিকে পুনরুজ্জীবিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার রচিত একমাত্র আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘জীবন সংগ্রাম সমকালীন রাজনীতি’। ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা