Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 9:12 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

আজ জাফর, জয়নাল, দীপালি সাহা, মোজাম্মেল, আইয়ুবসহ ১০ জনের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৩ সালের এই দিনে স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধ আন্দোলনে শহিদ হন তারা। দিনটি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকার একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে, যা মজিদ খান শিক্ষানীতি হিসেবে পরিচিত।

তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল এবং সংবিধান রহিত করে সাত্তারের জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভা বাতিল ঘোষণা করেন। ড. মজিদ খান শিক্ষানীতিতে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকেই বাংলার সঙ্গে আরবি ও ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। এসএসসি কোর্স ১২ বছর, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব ও শিক্ষার ব্যয়ভার যারা ৫০ শতাংশ বহন করতে পারবে, তাদের রেজাল্ট খারাপ হলেও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার মতো কথাও বলা হয়েছিল এ শিক্ষানীতিতে। মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার ৫০ শতাংশ ব্যয় শিক্ষার্থীর পরিবারকে বহন করতে হতো।

ওই শিক্ষানীতি বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্মারকলিপি দেয়ার কর্মসূচি নেয়। সেই প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ বাহিনী আকস্মিকভাবেই টিয়ার গ্যাস, জলকামান ও গুলিবর্ষণ ও হামলা চালায়। এতে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে।

১৯৮২ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়ে একমত হয় ছাত্র সংগঠনগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে শুরু হয় ছাত্র আন্দোলন, কালক্রমে যেটি গণআন্দোলনে রূপ নেয়। পুলিশের গুলিতে জয়নাল, জাফর, দীপালি সাহা, মোজাম্মেল, আইয়ুবসহ ১০ জন নিহত হন। সরকারি হিসাবে গ্রেপ্তার হন এক হাজার ৩১০ জন। এর পরদিন চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন কাঞ্চন। ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের আন্দোলনের তীব্রতায় স্বৈরাচারী সরকার ও প্রশাসন বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি স্থগিত করতে বাধ্য হয়।

কাজী সালমা সুলতানা