প্রখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ১৪৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব, বিশেষত ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র আবিষ্কার করে বিশ্বখ্যাতি অর্জন করেছেন। তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ অবদান এবং বিশেষত আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া-সম্পর্কিত গবেষণার জন্য তিনি ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা এবং নতুন নতুন বিষয় উদ্ভাবন ও আবিষ্কারের মাধ্যমে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন। বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীরা আলবার্ট আইনস্টাইনকে সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আইনস্টাইন ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জার্মানির উল্ম শহরে জš§গ্রহণ করেন। ১৮৯৫ সালে তিনি সুইজারল্যান্ডে চলে আসেন এবং পরের বছর জার্মান নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। ১৯০০ সালে তিনি জুরিখের ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল থেকে একাডেমিক শিক্ষা ডিপ্লোমা অর্জন করেন। ১৯০১ থেকে ১৯০৭ পর্যন্ত আইনস্টাইন পাঁচটি রচনা প্রকাশ করেন। এসব রচনায় প্রচলিত বিষয়কে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। ১৯০৫ সালে তার চারটি রচনা প্রকাশিত হয়। প্রথমটি আলোর গঠন ও শক্তি সম্পর্কে। দ্বিতীয়টি অ্যাটমের আকৃতি-প্রকৃতি। তৃতীয়টি ব্রাউনিয়াম মুভমেন্টের ক্রমবিকাশের তত্ত্ব। চতুর্থটি তার বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব। একই বছর (১৯০৫) আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯০৯ সালে তিনি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এর পরই চার্লস ইউনিভার্সিটি অব প্রাগে পূর্ণ অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। প্রাগে অবস্থানকালে তিনি আলোর উপর মহাকর্ষের প্রভাব বিশেষত মহাকর্ষীয় লাল সরণ এবং আলোর মহাকর্ষীয় ডিফ্লেকশন বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র লিখেন। এর মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যগ্রহণের সময় আলোর ডিফ্লেকশনের কারণ খুঁজে পান। এ সময় জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ঊৎরিহ ঋৎবঁহফষরপয বিজ্ঞানীদের প্রতি আইনস্টাইনের চ্যালেঞ্জগুলো প্রচার করতে শুরু করেন। ১৯৩৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকাকালী এডলফ হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় এলে আইনস্টাইন আর জার্মানিতে ফিরে যাননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্রিটিশ দার্শনিক বার্টান্ড রাসেলের সঙ্গে মিলে আণবিক বোমার বিপদের কথা তুলে ধরে রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার রচনা করেন। আইনস্টাইনের ৩০০টিরও অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং ১৫০টির বেশি বিজ্ঞান-বহির্ভূত গবেষণাপত্র প্রকাশিত রয়েছে। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে ‘শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা