বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি মহাবিশ্বের উদ্ভব ও পরিণতির বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য বিশেষভাবে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক প্রকাশিত ‘দি আলটিমেট ফেইট অব দি ইউনিভার্স’ তার একটি বিখ্যাত গবেষণা গ্রন্থ। ড. জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৩৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ শহরে জš§গ্রহণ করেন। কলকাতার লরেন্স কলেজের পাঠ শেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়তে যান। এখান থেকে বিএসসি অনার্স করেন। বিএসসি শেষে ১৯৫৭ সালে ইসলাম কেমব্রিজে পড়তে যান। সেখানে প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান থেকে ১৯৫৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এখান থেকে ১৯৬০-এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ও প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে তিনি এসসিডি (ডক্টর অব সায়েন্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৬৩ থেকে ’৬৫ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডে ডক্টরাল-উত্তর ফেলোর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটনে অবস্থিত ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে ১৯৬৮, ১৯৭৩ ও ১৯৮৪ সালে ভিজিটিং সদস্য হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া কেমব্রিজের ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমি, ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডনের কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি কলেজ, কার্ডিফ (বর্তমানে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়) এবং লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটিতে ফলিত গবেষণা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটনে অবস্থিত ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে ১৯৬৮, ১৯৭৩ ও ১৯৮৪ সালে ভিজিটিং সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং গড়ে তোলেন গাণিতিক ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্র বা রিসার্চ সেন্টার ফর ম্যাথম্যাটিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স (আরসিএমপিএস)। তার বিখ্যাত রচনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দি আলটিমেট ফেইট অব দি ইউনিভার্স (ডব্লিউ বি বনোরের সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদনা), ক্লাসিক্যাল জেনারেল রিলেটিভিটি, রোটেটিং ফিল্ডস ইন জেনারেল রিলেটিভিটি, অ্যান ইন্ট্রোডাকশন টু ম্যাথমেটিক্যাল কসমোলজি, কৃষ্ণবিবর, মাতৃভাষা ও বিজ্ঞানচর্চা প্রভৃতি। অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি কর্তৃক স্বর্ণপদক, একুশে পদক ছাড়াও নানা পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা
