নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নন্দিত মার্কিন মানবতাবাদী নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মার্টিন লুথার কিং ১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার জর্জিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। আটলান্টার বুকার টি ওয়াশিংটন হাইস্কুলে তার স্কুল জীবন শুরু। কালো চামড়ার ছিলেন বলে কালোদের জন্য নির্দিষ্ট স্কুলে তাকে যেতে হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি মোর-হাউজ কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯৫৫ সালে বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে দর্শন শাস্ত্রে লুথার পিএইচডি, ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে কৃষ্ণাঙ্গদের অর্থনৈতিক মুক্তি, চাকরির সমতা অর্জন এবং সর্বক্ষেত্রে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লুথার কিং, বেয়ারড রাস্তিন এবং আরও ছয়টি সংগঠনের সহায়তায় মার্চ অন ওয়াশিংটন ফর জব অ্যান্ড ফ্রিডম নামে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করেন। এই সমাবেশটি ছিল আমেরিকার ইতিহাসে সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ। মার্টিন লুথার কিং ভাষণে বলেন, ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’। তিনি বলেন, ‘ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কোনো প্রাপ্তি নেই, যতক্ষণ নিগ্রোরা পুলিশের বর্ণনাতীত নির্যাতনের শিকার হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কোনো প্রাপ্তি নেই, যতক্ষণ ভ্রমণক্লান্ত নিগ্রোরা শহরের হোটেল বা মোটেলে বিশ্রামের অধিকার পাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের প্রাপ্তি নেই, যতক্ষণ আমাদের শিশুরা ‘কেবল শ্বেতাঙ্গদের জন্য’ লেখা সাইনবোর্ড দেখবে। আমি জানি, তোমরা কেউ এসেছে দূর-দূরান্ত থেকে। কেউ জেলের কুঠরি থেকে। কেউ পুলিশের টর্চার সেল থেকে। তোমরা যার যার ঘরে ফিরে যাও। কিন্তু কাদাজলে ডুব দিয়ে থেকো না। হয়তো আজ বা আগামীকাল আমাদের জন্য সংকটময় হবে। তবুও আমি স্বপ্ন দেখি। এই স্বপ্ন গাঁথা আছে আমেরিকার অস্তিত্বে। আমি স্বপ্ন দেখি, এক দিন এ জাতি জাগ্রত হবে এবং মানুষের এ বিশ্বাসের মূল্যায়ন করবে, সব মানুষ জন্মসূত্রে সমান।’ এ ভাষণের প্রভাবে ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার আইন ও ১৯৬৫ সালে ভোটাধিকার আইন প্রণীত হয়। ১৯৬৪ সালে শাস্তিতে নোবেল বিজয়ী হন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। তিনি ১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল আততায়ীর হামলায় নিহত হন।
কাজী সালমা সুলতানা