ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা, রাজনীতিবিদ শওকত আলীর ১০৫তম জš§দিন আজ। তিনি ভাষা আন্দোলনে গঠিত তিনটি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদেরই সদস্য ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের (যা বর্তমানে আওয়ামী লীগ) একজন প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।
শওকত আলী ১৯১৮ সালের ২০ এপ্রিল তৎকালীন পূর্ববাংলার ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় জš§গ্রহণ করেন। দুই বছর বয়সে তিনি তার মাকে হারান। পরে তার পিতা ও মামা-মামির সান্নিধ্যে বড় হয়ে ওঠেন। শওকত আলী লেখাপড়া শুরু করেন মুসলিম হাই স্কুলে। উচ্চবিদ্যালয় পাস করার পর তিনি জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে বিকম ডিগ্রি লাভ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে লেখাপড়া শেষ করতে পারেননি।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দাবি তুলে তমদ্দুন মজলিস বাংলা ভাষা আন্দোলন শুরু করে। শওকত আলী প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ তমদ্দুন মজলিশের রাষ্ট্রভাষা উপ-কমিটির একজন সদস্য হিসেবে ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখেন ।
তার ১৫০ মোগলটুলির বাসস্থানটি ছিল ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মীবাহিনীর মিলনক্ষেত্র। ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক কার্যক্রম এখান থেকেই পরিচালিত হতো। দেশ ভাগের আগে এ বাড়িতেই স্থাপিত হয় ‘ওয়ার্কার্স ক্যাম্প’ ও মুসলিম লীগ পার্টি হাউস।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেন প্যালেসে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন ‘১৫০ নম্বর মোগলটুলিতে প্রথমে উঠব ঠিক করলাম। শওকত মিয়া মোগলটুলি অফিসের দেখাশোনা করে। মুসলিম লীগের পুরোনো কর্মী। আমার বন্ধুও। শামসুল হক সাহেব ও শওকত সাহেব আমাকে পেয়ে খুবই খুশি। শওকত আমাকে নিয়ে কী যে করবে ভেবেই পায় না। তার একটা আলাদা রুম ছিল। আমাকে তার রুমেই জায়গা দিল। আমি তাকে শওকত ভাই বলতাম।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে হত্যার শিকার হন। তার হত্যার সংবাদে সেদিনই শওকত আলী স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ও ১৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। ২০১১ সালে তিনি (মরোণত্তর) একুশে পদকে ভূষিত হন।
Ñকাজী সালমা সুলতানা
